বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: ইডিকে সরকার ব্যবহার করছে না, এই সাফাই দিতে গিয়ে ভুল তথ্য পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman)। বুধবার রাজ্যসভায় নির্মলা ইডিকে (ED) সরকার অপব্যবহার করছে না সেই দাবি জানাতে গিয়ে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার ছবি তুলে ধরেন। ওই ছবি তুলে ধরে নির্মলা বলেন, “এক মন্ত্রীর বাড়ি থেকে এই টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। এরপরেও কি সদস্যরা বলবেন যে সরকার ইডির অপব্যবহার করছে?”
অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার ছবি কেন মন্ত্রীর নামে চালানোর চেষ্টা করলেন নির্মলা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। ছবিটি রাজ্যসভার সচিবালয়ে রেখে দেওয়ার নির্দেশ দেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। ইডিকে দিয়ে রাজ্যে রাজ্যে সরকার ভাঙানোর চক্রান্ত কেন্দ্র করছে বলে বিরোধীদের তোলা অভিযোগের উত্তরে নির্মলা এদিন বলেন, “যাঁরা নিজেরা নিজেদের দল ধরে রাখতে পারছে না, তাঁরাই এই সব অভিযোগ তুলছেন।” নির্মলার এই মন্তব্যের পরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। নির্মলা সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি বিরোধীদের।
[আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে দক্ষিণের পাঁচ তীর্থক্ষেত্রে পাড়ি দেবে বিশেষ ট্রেন, রেলযাত্রায় ‘স্বদেশ দর্শন’]
এদিন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন অভিযোগ তোলেন, কেন্দ্র রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। এর জবাবে অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে নিয়েই রাজ্যগুলিকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অ-বিজেপি রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের ‘অবিচারে’র অভিযোগে নির্মলা বলেন, কংগ্রেস জমানায় গুজরাটে সর্দার সরোবর প্রকল্প আটকানো হয়। এমনকী ইউপিএ আমলে কংগ্রেস অ-কংগ্রেসী রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করেছিল বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত জুলাই মাসে গ্রেপ্তার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও (Arpita Mukherjee)। তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। এছাড়া সোনার গয়নাগাটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপর একে একে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহা-সহ একাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। তাদের কাছ প্রতিনিয়ত নানা তথ্য হাতে আসছে বলেই দাবি তদন্তকারীদের। ধৃত সকলেই আপাতত জেলে রয়েছেন।