বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: প্লেনারি অধিবেশনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক এড়াতে সতর্ক কংগ্রেস। বেশ কয়েকটি অধিবেশনের পর এবার প্লেনারিতে সমনোভাবাপন্ন কোনও ভিনদেশি দলকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। তবে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতৃত্বেকে আমন্ত্রণ জানান হতে পারে বলে এআইসিসি সূত্রে খবর। কংগ্রেসকে চিন্তায় ফেলেছে চিন ও পাকিস্থানের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্ক। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ (NDA) সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চিনের সঙ্গে সম্পর্ক তলালিতে ঠেকেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকেই তলানিতে। তাই কোনও বিদেশি প্রতিনিধি এবারের প্লেনারি অধিবেশেন থাকছেন না বলেই আকবর রোডের কংগ্রেস সদর দপ্তর সূত্রে খবর।
কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের সমনোভাবাপন্ন দলের শীর্ষনেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানান হয়ে থাকে। যেমন কমিউনিস্ট পার্টি অফ চিন (CCP), বাংলাদেশের আওয়ামী লিগ (Awami Legaue), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (PPP) বা ন্যাশানাল কংগ্রেস পার্টি অফ আফ্রিকার নেতৃত্বেক আমন্ত্রণ জানানো হয়ে থাকে। রাজনৈতিক মতবিনিময় বা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতেই এইসব দলের নেতৃত্বকে আহ্বান করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্তিরতা। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও অব্যাহত। আর্থিক সংকটে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
[আরও পড়ুন: নির্ভয়ে পক্ষপাতহীন সংবাদ পরিবেশন চলবে, আয়কর সমীক্ষা শেষ হতেই বিবৃতি BBC’র]
এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ‘আত্মনির্ভর ভারত’ বা ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশে’র ডাক দিয়ে জাতীয়তাবোধ উসকে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election)। তার আগেই জাতীয়তাবোধ উসকে দিতে মোদির আত্মনির্ভর ভারতের প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাবে গেরুয়া শিবির। এমনটাই ধারনা কংগ্রেসের নেতৃত্বের। তার উপর করোনার (Coronavirus) সময় থেকেই চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। এরপর রয়েছে সীমান্ত সমস্যা। চিনের মতো পাকিস্তানের সঙ্গেও সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েন পুরনো একটি ইস্যু। এহেন পরিস্থিতিতে সমমনোভাবাপন্ন বিদেশি দলের নেতৃত্বকে প্লেনারি অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানালে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভারত বিরোধী প্রচার শুরু করবে গেরুয়া শিবির। বিজেপির হাতে প্রচারের এহেন হাতিয়ার তুলে দিতে নারাজ এআইসিসি (AICC)। তাই এবার অন্তত কোনও ভিনদেশি দলকে অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। কারণ এমনিতেই রাহুলকে চিনের বন্ধু বলে আগেই দাগিয়ে রেখেছে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিশেষ আমন্ত্রণ, কেমব্রিজে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী]
২০০৮ সালের অধিবেশনে কমিউনিস্ট পার্টি অফ চিনের সঙ্গে একটি মউ স্বাক্ষর করে কংগ্রেস। তারপরেই রাহুলকে চিনের বন্ধু বলে প্রচারে নামে বিজেপি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবারও ভিনদেশি সমনোভাবাপন্ন কোনও দলকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন দলের এক শীর্ষনেতা।