শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সিলেটি লোকগান ‘নয়া দামন’-এর ঝড় এবার কোভিড (COVID-19) ওয়ার্ডেও। পিপিই কিট পরেই অসাধারণ নাচ করে কোভিড ওয়ার্ডের রোগীদের মন ভাল করে দিলেন এক নার্স। তাঁর নাচের সেই ভিডিও ভাইরাল ইতিমধ্যেই। খোঁজ করতে গিয়ে জানা গিয়েছে, দৃশ্যটি আসানসোল (Asansol) জেলা হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডের। যিনি পিপিই কিট পরে নাচ করেছেন, তাঁর নাম ইন্দ্রানী দত্ত। করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই অস্থির সময়ে দমবন্ধ পরিবেশ থেকে রোগীদের একটু আনন্দ দিতেই এই নাচ তাঁর। “আইলারে নয়া দামন, আসমানেও তেরা” – সিলেটি লোকগীতিতে বাংলাদেশি তনয়াদের নাচ নেটিজেনদের মন কেড়েছে ইতিমধ্যেই। এবার তাঁদের অনুকরণ করে নেচে প্রশংসা কুড়োলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের নার্স ইন্দ্রানী।
গত বছর মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডের ডাক্তার রিচা নেগির নাচ ভাইরাল হয়েছিল। হাই গরমি গানে কোভিড ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট পোশাক পিপিই (PPE) কিট পরেই নাচ করেছিলেন তিনি। দেশজুড়ে সেই নাচের ভিডিও প্রথম ভাইরাল হয়। আসানসোলের ইন্দ্রানীর নাচও খানিকটা সেরকম ভাবেই রেকর্ড হয়েছে। টেবিলে মোবাইল ফোন রেখে গান বাজিয়ে সেলফি মোডে নিজেই তা রেকর্ড করেছেন ইন্দ্রানী। সিলেটি লোকগান ‘নয়া দামনের’ ২ মিনিট ৯ সেকেন্ডের নাচ ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
[আরও পড়ুন: পেটের দায়ে জঙ্গলে যাওয়াই কাল, বাঘের হামলায় প্রাণ গেল সুন্দরবনের মৎস্যজীবীর]
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নার্স ইন্দ্রানী দত্তর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোভিড রোগীদের আনন্দ দিতে এবং এই দমবন্ধ পরিবেশ থেকে নিজেরাও একটু আনন্দ পেতে এই নাচ।” কোভিড লড়াইয়ে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থকর্মীরাই প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করছেন। অনেকেই কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন, সহকর্মীদের হারিয়েছেন অনেকে। তবু ভয় না পেয়ে আবার যুদ্ধে ফিরে এসেছেন। এভাবেই যুদ্ধ ক্ষেত্রে আনন্দ খুঁজে নিয়েছেন তাঁরা। মনের আনন্দে ডিউটিরত ইন্দ্রানীর প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।
[আরও পড়ুন: পাচারের আগেই পর্দাফাঁস! সিউড়ি থেকে ধৃত দুই আন্তঃরাজ্য অস্ত্র কারবারি]
স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও বেশ কয়েকটি রাজ্যে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। মৃতের সংখ্যাও কম নয়। সারা দেশ জুড়েই জারি হয়েছে আংশিক বা কার্যত লকডাউন এবং নাইট কারফিউ। পাশাপাশি, করোনা আক্রান্তদের গৃহবন্দি থাকার কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যারা অত্যধিক অসুস্থ তাঁরা ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে ভরতি আক্রান্তরা। দিনে দিনে তাঁদের মনের জোর কমছে। বিশেষ করে যারা আইসিইউতে সংকটজনক পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তাঁদের অবস্থা তো আরও খারাপ। এই অবস্থায় ‘করোনা যোদ্ধা’ নার্সের অভিনব উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন আসানসোলবাসী।