অভিরূপ দাস: মৃতদেহ উদ্ধার শেষ হয়েছে। রেলের বক্তব্য এমনই। তবু কেন কমছে না গন্ধ! যশবন্তপুর হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের ভাঙাচোরা দুটো কোচ থেকে রবিবার রাতেও যে পচা গন্ধ বেরিয়েছে, গা গুলিয়ে উঠেছে গ্রামের বাসিন্দাদের। অনেকেই নাক চাপা দিয়ে বমি করে ফেলছেন। মানুষ তো কোন ছার কুকুর-বিড়ালও মাড়াচ্ছে না ও পথে। ভনভন করছে মাছি। রবিবারই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের কাছে গ্রামবাসীরা তদ্বির করেন। ‘‘ভাল করে খুঁজে দেখতে হবে যশবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্টের পড়ে থাকা দুটো কোচ। নিশ্চিত ওখানে মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।’’ সেইমতো নতুন তল্লাশি অভিযানের পরিকল্পনা নেয় এনডিআরএফ। সোমবার ভোররাতে তোবড়ানো দুটো কামরার কাছে আসতে কাঁধের তোয়ালে নাকে টেনে নেন এনডিআরএফ-এর কর্মীরাও।
গন্ধ সত্য়িই প্রবল। অস্বাভাবিক পচা দুর্গন্ধের সূত্র খুঁজতে শুরু হয় তল্লাশি। শেষমেশ বুটের তলায় চ্যাটচ্যাটে কিছু লাগতেই টর্চ ফেলেন এক এনডিআরএফ কর্মী। ভালো করে ঠাওর করতেই বোঝা যায় চ্যাটচ্যাটে আঠালো ওই জিনিস আদতে ডিমের কুসুম। পচে শুকিয়ে কালচে হয়ে গিয়েছে। চারপাশে পড়ে রয়েছে শয়ে শয়ে ডিমের শুকনো খোলা। পচে তার থেকেও গা গুলিয়ে ওঠা গন্ধ বেরোচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় ‘শোকস্তব্ধ’ রাজা চার্লস, ভারতের পাশে ব্রিটেন]
এনডিআরএফ কর্মীরা জানিয়েছেন, ডিম আসছিল ট্রেনের কোচে চেপে। অসংখ্য ডিম বাংলার বাজারে আসে ট্রেনে চেপে। ডিম ছিল ট্রেনের প্যান্ট্রি কারেও। দুর্ঘটনার প্রবল ঝাঁকুনিতে ওলট পালট হয়ে গিয়েছে বগি। স্বাভাবিকভাবেই সে সব ডিম ফেটে চৌচির। পড়ে থেকে থেকে পচে তার থেকেই উৎকট গন্ধ বেরোচ্ছে। রেল সূত্রে খবর ওই দু’টি কোচ থেকে অসংখ্য বাক্স-প্যাঁটরা পাওয়া গেলেও মেলেনি কোনও মৃতদেহ। অতশত পচা ডিমের গন্ধ তাড়ানো সহজ নয়। গন্ধ তাড়াতে ওই বগিতে স্যানিটাইজ করছে রেল কর্তৃপক্ষ। দেওয়া হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে চলে যাবে পচা গন্ধ।