কল্যাণ চন্দ্র, মুর্শিদাবাদ: রথযাত্রার বিশেষ দিনটিতে বড় ছেলের জন্ম হওয়া সত্ত্বেও তাঁর নাম ‘জগন্নাথ’ রাখতে পারেননি বলে আক্ষেপ ছিল বাবার। সেই বড় ছেলের পুত্রসন্তানও জন্ম নিল রথযাত্রার দিনেই। তার নাম রাখা হল জগন্নাথ। ঈশ্বরের নাম রাখা সৌভাগ্যের বলে জানাচ্ছেন নবজাতকের দাদু অভিমন্যু মণ্ডল। তাঁর ছেলে-বউমাও নবজাতকের নাম জগন্নাথ রাখায় ভীষণ খুশি। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার আট বছর পরে রথযাত্রার দিন পুত্রর জন্ম হওয়ার কারণেই তার নাম রাখা হয়েছে জগন্নাথ বলে জানাচ্ছেন নবজাতকের মা এবং বাবা।
বেলডাঙা থানার শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা অভিমন্যু মণ্ডল। তাঁর বড়ছেলে বিশ্বজিৎ কর্মসূত্রে পুনেতে থাকেন। তবে পুত্রবধূ থাকেন বেলডাঙাতেই। তাঁদের এক কন্যা রয়েছে। প্রায় আট বছর পর বিশ্বজিৎ মণ্ডলের স্ত্রী শ্রাবণী মণ্ডল এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত্রি বারোটা নাগাদ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন শ্রাবণী।
রথযাত্রার পুণ্য তিথিতে নবজাতক জন্ম হওয়ার কারণে তার নাম রাখা হয়েছে জগন্নাথ। এদিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শ্রাবণী বলেন, "আমি ভেবেছিলাম আমার ছেলের নাম রাখব সোমনাথ। পুত্র সন্তানের লাভে ঈশ্বরকে ডাকতাম আমি। তবে রথযাত্রার পূর্ণ তিথিতে পুত্রসন্তান জন্ম নেওয়ায় তার নাম রাখা হল জগন্নাথ।" অন্যদিকে বিশ্বজিৎ বলেন, "সন্তানের উপর সবচেয়ে বেশি অধিকার তার মায়ের। ফলে আমার স্ত্রী নবজাতকের নাম রেখেছে জগন্নাথ তাতে আমি ভীষণ খুশি।"
অন্যদিকে, শ্রাবণী মণ্ডলের শ্বশুর-শাশুড়িও ভীষণ খুশি হয়েছেন। শ্রাবণী দেবীর শ্বশুর অভিমন্যুর কথায়, "ঈশ্বরের নামে মানুষের নাম রাখা সৌভাগ্যের ব্যাপার। আজকের দিনেই আমার বড় সন্তান বিশ্বজিতের জন্ম হয়েছিল। বিশ্বজিতের নাম জগন্নাথ রাখার ইচ্ছা থাকলেও বাড়ির বড়দের কথা আমি ঠেলতে পারিনি। আজকে নাতির নাম জগন্নাথ রাখায় আমার সেই ইচ্ছা পূর্ণ হল।" তিনি আরও বলেন, "তাছাড়া বাড়িতে দিঘার জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ পেয়ে ভক্তি আরও বেড়েছে। আমার আরও বেশি ভালো লাগছে যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দির গড়ে দিয়েছেন, রথযাত্রার দিনেও মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় গিয়ে উৎসব পালন করছেন, রথের দড়ি টেনে মানুষকে ধার্মিক করে তুলছেন। এর চেয়ে আর বড় পাওনা কী হতে পারে।"
