সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়ির বউ বড্ড একঘেয়ে। আর তেমন আকর্ষণীয় লাগছে না। পরকীয়ায় মন মজেছিল। সম্পর্কও তৈরি হয়েছিল এক তরুণীর সঙ্গে। কিন্তু নিজের এলাকায় প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটানো তো সম্ভব নয়। তাই তাঁকে নিয়ে নেপাল সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন ঢাকার যুবক। শেষমুহূর্তে সেকথা জানতে পেরে যান মা আর স্ত্রী। আর তারপর প্রেমিকাকে নিয়ে ফূর্তির সফর রুখতে তাঁরাও পালটা পরিকল্পনা করলেন। তাতে ছেলেকে আটকাতে সফল হলেও নিজেদের শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারলেন না। নিজেদের কৃতকর্মের জন্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন যুবকের মা ও স্ত্রী।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা নিয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করেছে র্যাব। তাতেই জানা গিয়েছে গোটা বিষয়টি। ঠিক কী ঘটেছিল? র্যাব সদস্যদের বক্তব্য অনুযায়ী, ঢাকার এক যুবক মা, স্ত্রীর কাছে মিথ্যা কথা বলে প্রেমিকাকে নিয়ে নেপাল সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ গোপনীয়কা রক্ষা করতে পারেননি। তাঁর সেই সফরের কথা জানতে পেরেছিলেন মা ও স্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে দু'জনে মিলে ছেলেকে আটকাতে প্ল্যান করেন। খোঁজ নেন কোন বিমানে ঢাকা থেকে কাঠমাণ্ডু যাচ্ছেন ছেলে। এরপরই নিজেদের 'অস্ত্র' প্রয়োগ করেন।
নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ শুক্রবার ঢাকার বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করেন তাঁরা। যে বিমানে ছেলে আর প্রেমিকা রয়েছে, সেই বিমানের নম্বর উল্লেখ করে জানান, তাতে বোমা রয়েছে, অবিলম্বে বিমান খালি না করলে বড় বিপদ। তা শুনে স্বভাবতই অত্যন্ত উদ্বেগপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয় বিমানবন্দরে। বিমানটি ওড়ার অল্প কিছুক্ষণ আগেই দ্রুততার সঙ্গে তা খালি করে দেওয়া হয়। বাতিল হয় উড়ান। তন্নতন্ন করে চলে তল্লাশি। কিন্তু কোথাও কোনও বোমার অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তখন যে নম্বর থেকে ভুয়ো বোমাতঙ্কের ফোনটি এসেছিল, সেই নম্বরটি ট্র্যাক করে শাশুড়ি-পুত্রবধূর হদিশ পান তদন্তকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় অবশ্য নিজেদের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, ছেলের পরকীয়া রুখতেই এমন কাজ করেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ মেটাতে এভাবে ভুয়ো আতঙ্ক ছড়িয়ে জনসাধারণের এত বড় ক্ষতি করা বড়সড় অপরাধ। তাই আইন অনুযায়ী ধৃতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাতে কুছ পরোয়া নহি! প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলের ফূর্তির পরিকল্পনা তো ভেস্তে দেওয়া গিয়েছে।
