সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'নির্যাতন' নারী-পুরুষ দেখে না। সে খোঁজে 'শিকার'। পরিস্থিতি এবং লিঙ্গভেদে তার রূপ (শারীরিক ও মানসিক) বদলায় মাত্র। স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত এমনই এক পুরুষের করুণ ছবি ধরা পড়ল বেঙ্গালুরুতে। বাড়ি থেকে পালিয়েও মেলেনি রেহাই। শেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর নির্যাতিতর আরজি, 'প্রয়োজনে আপনারা আমায় জেলে পুরুন কিন্তু আমি বাড়ি ফিরব না।' রীতিমতো কাঠখড় পুড়িয়ে নিখোঁজকে উদ্ধার করার পর তাঁর মুখে এমন কথা শুনে রীতিমতো 'থ' খোদ পুলিশ কর্তারা।
উত্তর বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এক ব্যক্তি গত ৪ আগস্ট হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। ঘটনার পর পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর স্ত্রী। দাবি করা হয়, বাড়ি থেকে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে আর তিনি ফেরেননি। সোশাল মিডিয়াতেও এই বিষয়ে সরব হন তিনি। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এর পর নয়ডা থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, স্ত্রীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন তিনি। ওই ব্যক্তির দাবি অনুযায়ী, 'আমি ওই মহিলার দ্বিতীয় স্বামী। ৩ বছর আগে ওর সঙ্গে আমার দেখা হয়। তখন ও বিবাহ বিচ্ছিন্না এবং ১২ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। ওর সঙ্গে বিয়ের পর আমাদের ৮ মাসের এক মেয়ে রয়েছে।'
[আরও পড়ুন: ‘সব মরবে’, হুমকি ইমেলের জেরে রাজস্থানের শতাধিক হাসপাতালে বোমাতঙ্ক]
পুলিশের কাছে ওই ব্যক্তির দাবি, "বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই ওর আসল রূপ আমি দেখতে পাই। বাড়িতে আমার কোনও স্বাধীনতা নেই। পান থেকে চুন খসলেই বউয়ের চিৎকার চেঁচামেচি চরম আকার নেয়। পাতের থেকে যদি এক টুকরো রুটি পড়ে গেলেও ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওর মতো করে আমাকে পোশাক পরতে হবে। এমনকী বাড়ির বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে চা খাওয়ারও অধিকার নেই আমার।" ব্যক্তির দাবি, তাঁকে মারধরও করতেন তাঁর স্ত্রী। দিনের পর দিন এই ঘটনা সহ্য করতে না পেরেই তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এর পর পুলিশের কাছে তিনি অনুরোধ জানান প্রয়োজনে তাঁকে জেলবন্দি করা হোক, কিন্তু তিনি বাড়ি যাবেন না। যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাড়ি পাঠায় পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ভূস্বর্গে ভোট প্রস্তুতি তুঙ্গে, দলের মধ্যেই প্রবল চাপে ওমর-মেহবুবারা]
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে বেঙ্গালুরু পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তির স্ত্রী কিছুদিন আগে থানায় এসে তাঁর স্বামীর নিঁখোজ হয়ে যাওয়া অভিযোগ করেন। সেই মতো তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি উনি বাসে তিরুপতি হয়ে ট্রেনে ভুবনেশ্বর চলে যান। এর পর সেখান থেকে দিল্লি হয়ে নয়ডায় গা ঢাকা দেন। তবে ফোন বন্ধ থাকায় ও চেহারা বদলে ফেলায় তাঁর খোঁজ পেতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এর পর নতুন সিম কিনে তিনি নিজের ফোনে তা ব্যবহার করতেই ব্যক্তির খোঁজ পায় পুলিশ। নয়ডায় এক শপিং মলের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় তাঁকে উদ্ধার করে বিমানে বেঙ্গালুরুতে আনা হয়। গোটা ঘটনা শোনার পর ওই ব্যক্তির স্ত্রীকেও পুলিশ পরামর্শ দেয় তাঁর সঙ্গে কিছুটা নরম ব্যবহার করার জন্য।