অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বিকল্প দেশি প্রজাতির ধান চাষে সাফল্য পেতে চলেছে নারায়ণগড় ব্লক। এবারে ফলনও হয়েছে প্রচুর। স্বভাবতই খুশি কৃষকরা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানাভাবে যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির বীজধান দেওয়া হয়েছে বহুবার। গত কয়েক বছর ধরে কৃষকদের উৎসাহিত করে চলেছে কৃষি দপ্তর। ফলে গত কয়েক বছরের মতো এবছরও বিপুল পরিমাণে বিকল্প দেশি প্রজাতির বীজ ধান চাষ করে সাফল্য পেতে চলেছে নারায়ণগড় ব্লকের কৃষকরা। আর্থিকভাবে এ বছর আরও বেশি লাভের অঙ্ক দেখবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
[৬৪ প্রজাতির ধান চাষ, নয়া ভাবনায় সাফল্য কৃষকদের]
গত কয়েক বছর ধরে চলতি শংকর, লাল স্বর্ণ, মুগির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত উন্নত দেশি এবং অপ্রচলিত গোবিন্দভোগ, বাদসাভোগর চাষ শুরু করেন কৃষকরা। এতে তাঁরা লাভবানও হন। এবছর তাই গোবিন্দভোগ, বাদশা ভোগ, এর পাশাপাশি একই ভাবে দেশীয় প্রজাতির খাড়া, ব্ল্যাক রাইস, কোমল, জোহা, রাঁধুনি পাগল নামক দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষ করেন। ফলনও হয়েছে এবছর যথেষ্ট জানিয়েছেন কৃষকেরা। এ বছরও গত কয়েক বছর গুলির থেকে আরও বেশি লাভের আশা দেখছেন চাষিরা। কারণ এই দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষের ক্ষেত্রে কোনও আধুনিক কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না।
[গমের পরিবর্তে মুসুর-সরিষা চাষই নয়া দিশা কৃষকদের]
নারায়ণগড়ের এক কৃষক সোমনাথ জানার কথায়, “আমরা এই বছর খাড়া, ব্ল্যাক রাইস, কমল, জোহা, রাঁধুনি পাগলের মতো দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষ করে ছিলাম। ব্লক অফিস থেকে এই চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল । তাই এই বছর চলতি চাষগুলি ছেড়ে একটু নতুনত্ব বিকল্প চাষ করে ছিলাম আগের তুলনায় এ বছর ফলন বেশি দেখছি।” অপর এক চাষি নারায়ণগড় ব্লকের নরসিংহপুরের বাসিন্দা গোবিন্দ প্রসাদ মাইতি জানান, “আমরা এ বছর দেশীয় বিকল্প প্রজাতির বীজ ধান চাষ করে অনেক ফলন পেয়েছি। বাজারের চাহিদাও রয়েছে আমরা এই ধরনের চাষ করতে চাই।” ব্লক কৃষি টেকনলজি ম্যানেজার বকুল কুমার সাউ জানিয়েছেন, “নারায়ণগড়ের সোমনাথ জানা চাষাবাদ করেছেন দেশীয় বিকল্প ফলনশীল ধানের। পাশাপাশি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ধানের বীজ সংরক্ষণ করে আসছেন তিনি। তাঁর চাষ করা দেশীয় বিকল্প ধানের ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। ব্লক স্তর থেকে বিভিন্ন রকমের সাহায্য করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষক বন্ধু সোমনাথ জানাকে আরও উন্নত প্রযুক্তির চাষের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” ব্লক কৃষি অধিকর্তা কল্যাণকুমার গঙ্গোপাধ্যায় জানান, “আমরা কৃষকদের জন্য সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। এবছর তাই দেশি প্রজাতির বিকল্প ধান চাষে কৃষকদের উৎপাদিত ফলনের পরিমাণ যথেষ্ট ভাল হয়েছে। আমরা যেমন দেশীয় বিকল্প ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করে ছিলাম তেমনি তাঁরা ভাল ফলন উৎপাদন করেছেন। লাভের অঙ্ক দেখিয়ে আমরা কৃষকদেরকে খুশি করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও উদ্যোগ আমরা এই অঞ্চলে করে যাব।” সব মিলিয়ে এই বছর নারায়ণগড় ব্লকের কৃষি দপ্তরের ও কৃষকদের সাফল্য চোখে পড়ার মতো।
The post দেশি প্রজাতির বিকল্প ধানচাষে সাফল্য নারায়ণগড়ে appeared first on Sangbad Pratidin.