Advertisement
অতিথির নাম ফ্লেমিঙ্গো! শীতে রংবদল রাজস্থানের সম্বর হ্রদের, দেখুন ছবি
'পিঙ্ক সিটি' জয়পুরের অদূরে এই হ্রদের বিশেষত্ব জানেন?
এ যেন প্রকৃতির রংমিলান্তি খেলা। গোলাপি শহরের গোলাপি হ্রদ। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই এই মুহূর্তে বাস্তব চিত্র। রাজস্থানের জয়পুর 'পিঙ্ক সিটি' বা 'গোলাপি শহর' বলে পরিচিত। আর জয়পুরের অদূরে সম্বর হ্রদও এখন গোলাপি আভায় পূর্ণ! এই মিল নিতান্তই কাকতালীয়। সৌজন্যে পরিযায়ী পাখির দল। শীতের মরশুমে সুদূর দক্ষিণ আমেরিকা থেকে রাজস্থানের এই হ্রদে বেড়াতে এসেছে গোলাপি ফ্লেমিঙ্গোর দল। তারাই হ্রদকে রাঙিয়ে দিয়েছে গোলাপি রঙে। বৈচিত্র্যের ভারতে এ এক বিরল দৃশ্য বইকী!
ফ্লেমিঙ্গোদের ভ্রমণ কাহিনীর আগে বরং রাজস্থানে সম্বর লেক সম্পর্কে দু-চার কথা বলে নেওয়া যাক। এর বিশেষত্ব হল নোনা জল। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় নোনা জলের হ্রদ এটি। সেইসঙ্গে নানা রত্নও পাওয়া যায় এখান থেকে। বছরভর সেসব সংগ্রহ করে এখান থেকে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন আশেপাশের বাসিন্দারা। ঋতু বদলে হ্রদের রংও বদলে যায়। নেপথ্যে নেন লবণের রসায়ন।
'গোলাপি শহর' জয়পুর থেকে সামান্যই দূরে এহেন সম্বর হ্রদ। পশ্চিম ভারতের এই হ্রদই এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। কারণ, এ হ্রদের গোলাপি রঙে যেন 'পিঙ্ক সিটি'র ছায়া। হ্রদের আশপাশ এখন দুধে-আলতা আভায় পূর্ণ। এ দৃশ্য অতি মনোরম।
রাতারাতি সম্বর লেকের এই রংবদলের নেপথ্যে যারা, তারা এদেশে কয়েকদিনের অতিথিমাত্র। নাম তাদের ফ্লেমিঙ্গো। সুদূর দক্ষিণ আমেরিকা এদের মাতৃভূমি। ব্রাজিল, উরুগুয়ে, ভেনেজুয়েলার মতো দেশ থেকে কয়েক মাইল আকাশপথে পাড়ি দিয়ে তারা পৌঁছেছে এদেশের একেবারে পশ্চিমে। ভিড় জমিয়ে লবণাক্ত সম্বর হ্রদে। তাদের শরীরের গোলাপি আভাই বদলে দিয়েছে হ্রদের রূপ।
দীর্ঘ গ্রীবা ও ঠোঁট, শরীরময় বড় পালকে ঢাকা, পা বেশ লম্বা। এই চেহারার ফ্লেমিঙ্গো পক্ষীকূলের মধ্যে খুব যে অচেনা, তা কিন্তু নয়। শীতে আশপাশের জলাশয়গুলিতে চোখ রাখলে পরিযায়ীদের ভিড়ে ফ্লেমিঙ্গো সদৃশ পাখি দেখাই যায়। এদের রং কখনও সাদা, কখনও সাদা-গোলাপি-খয়েরি মেশানো, কখনও আবার খাঁটি গোলাপি। এই শেষ শ্রেণির পাখিরাই দলে দলে এসে বসতি গড়েছে সম্বর লেকের ধারে।
রাজস্থানের হ্রদে এহেন ফ্লেমিঙ্গো সমাগম দেখে পক্ষী বিশারদরাও স্তম্ভিত। গৌরব দধিচ নামে এক বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, অনেকদিন ধরে তিনি ফ্লেমিঙ্গোকূলকে পর্যবেক্ষণ করছেন, এই সংখ্যাটা ২ থেকে ২.৫ লক্ষ হবেই। এবছর অতিবৃষ্টিতে হ্রদের জল এখনও শুকোয়নি। আর তাতে পাখিদের পর্যাপ্ত খাবারও রয়েছে। সেটা পরিযায়ী পাখিদের আকর্ষণের অন্যতম কারণ।
রোদের আলোয় যেমন গোলাপি পাখির ঝাঁক তাদের শরীরী আভায় যেমন পরিবেশকে ভরিয়ে তুলেছে এক অনন্য রঙে, তেমনই সন্ধ্যা নামার মুখে গোধূলির আলোতেও তাদের উপস্থিতি সম্বর হ্রদের এক মায়াবী রূপ দেখা যাচ্ছে। এই রংবদলই সাদামাটা সম্বর হ্রদ নজর কেড়েছে পর্যটকদেরও। রাজস্থান বেড়াতে দিয়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের টার্গেট, একটিবার গোলাপি ফ্লেমিঙ্গোদের দর্শন করে আসা।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 01:00 PM Dec 14, 2025Updated: 01:00 PM Dec 14, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
