Advertisement
পৃথিবীর যে দরজাগুলি কখনও খোলা হয়নি! কোন 'রহস্য' লুকিয়ে অন্দরে?
যুগ যুগ ধরে তালাবন্ধ দরজার ওপারে কোন রহস্য?
সব দরজাই যে অন্যদের ভিতরে প্রবেশ রুখতে তালাবন্ধ করা হয়, তা নয়। এমন দরজাও এই পৃথিবীতে রয়েছে, যা যুগ যুগ ধরে তালাবন্ধ রাখা হয়েছে ভিতরে থাকা কোনও 'রহস্য'কে অক্ষুণ্ণ ও নাগালের বাইরে রাখতেই। আমাদের দেশে তাজমহল হোক বা ভ্যাটিকান- সারা পৃথিবী জুড়েই বহু বিখ্যাত সৌধের দরজা ঘিরে রয়েছে এমনই রহস্য।
তাজমহলের নিচে ২২টি কক্ষ রয়েছে যার দরজা দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ ছিল। কিংবদন্তি সৌধটির মূল কাঠামোর নিচে অবস্থিত কক্ষগুলির ভিতরে হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বা মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ লুকিয়ে রাখার দাবি উঠেছে একাধিক বার। সপ্তদশ শতকে নির্মিত তাজের নিচের ওই কক্ষগুলি সম্পর্কে খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংও মুখ খুলেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তিনি আদালতের সম্মতি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে চান।
জাপানের হিমুরো ম্যানশনকে ঘিরে রয়েছে আশ্চর্য মিথ। টোকিওর উপকণ্ঠে অবস্থিত প্রাসাদটির প্রবেশপথ এক ‘বরফের দরজা’ দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছিল। এই বরফ কখনও গলে না। শোক এবং অশুভ শক্তিকে আটকে রাখার জন্যই ওই দরজা বন্ধ রাখা হয়েছে, এমনটাই লোকায়ত বিশ্বাস। তবে প্রাসাদটির অস্তিত্ব আদৌ ছিল কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবু টিকে আছে এই মিথ। অনেকে এমনও মনে করেন, ওই দরজাটি আসলে রূপক। তবে সত্যি হোক বা কল্পনা, যুগ যুগ ধরে টিকে রয়েছে দরজাটিকে ঘিরে রাখা রহস্যের কুয়াশা।
আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় বন্ধ করা দরজাটি হল কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের ভল্ট বি-র। আদালতের তত্ত্বাবধানে অন্য ভল্টগুলি খোলা হলেও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে এখনও অক্ষত ওই দরজাটি। মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে, শুধুমাত্র প্রাচীন কিছু আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই এটি নিরাপদে খোলা সম্ভব, যা এখন আর প্রচলিত নেই। কী রয়েছে দরজার ওপারে? মনে করা হচ্ছে, সেখানে রয়েছে পবিত্র বস্তু, পূজার উপকরণ রাখার ভাণ্ডার কিংবা গোপন কোনও ধনসম্পদ।
হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকা গ্রেট স্ফিংসের গায়ে নিপুণভাবে খোদাই করা রয়েছে একটা ছোট্ট দরজা, যাকে খালি চোখে ঠাহর করাই মুশকিল। অথচ ওই দরজাটি প্রাচীন মিশরের অন্যতম বিতর্কিত রহস্য। কী রয়েছে দরজার ওপারে, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলেন, গ্রন্থাগার। আবার কেউ বলেন, কোনও গোপন সুড়ঙ্গের প্রবেশপথ। এর নির্মাণে মিশে রয়েছে এমন সূক্ষ্ম কৌশল, যে চমকে উঠতে হয়। তবে আধুনিক সময়ে এটিকে খোলা সম্ভব নয় সম্পূর্ণ অন্য কারণে। কেননা সেক্ষেত্রে স্থাপত্যটি ভেঙে পড়তে পারে।
পৃথিবীর খুব কম দরজাই ভ্যাটিকানের অ্যাপোস্টলিক আর্কাইভের প্রবেশপথের মতো এমন রহস্যময়তায় ভরা! আগে এরই নাম ছিল ভ্যাটিকান সিক্রেট আর্কাইভস। এই দরজাটি একেবারেই খোলা হয় না তা নয়। তবে মুষ্ঠিমেয় বিশেষ অনুমোদনপ্রাপ্ত পণ্ডিত, গির্জার কর্মকর্তা এবং পুরাবিদদের জন্যই খোলা হয়। যদিও আর্কাইভটি পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়। জানা যায়, দরজাটির পেছনে রয়েছে শত শত বছরের পোপদের লেখা চিঠিপত্র, সম্রাট ও রাজাদের চিঠি, টেম্পলার নাইটদের বিচারের নথি, গ্যালিলিওর ইনকুইজিশনের রেকর্ড এবং বিশ্ব রাজনীতিকে রূপদানকারী কূটনৈতিক ফাইলপত্র। এর নকশাটি ইচ্ছাকৃতভাবে সংযত, পুরু কাঠ লোহা দিয়ে শক্তিশালী করা হয়েছে, তবুও এর প্রতীকী গুরুত্ব অপরিসীম। এটি এমন একটি দরজা যা আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নয়, বরং রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
Published By: Biswadip DeyPosted: 08:38 PM Dec 26, 2025Updated: 08:49 PM Dec 26, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
