স্টাফ রিপোর্টার: বিজেপির (BJP) রাজ্য নেতার বিরুদ্ধে এবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন দলেরই যুব মোর্চার আইটি সেলের ইনচার্জ মণীশ বিসা। রাজ্য বিজেপির আইনি সেলের ইনচার্জ লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্তা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মণীশ। মণীশের বক্তব্য, পোস্তা থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি। শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি দুই সিআরপিএফ জওয়ানের বিরুদ্ধেও থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, অস্বাভাবিক যৌন আচরণের মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, মণীশ বিসাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়, রাকেশ কুমার, রাহুল ও বিনোদ সিংয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে মণীশকে। এদিকে, দলের রাজ্য নেতার বিরুদ্ধে যুব নেতার এই বিস্ফোরক অভিযোগ এবং তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। স্পষ্টতই চাপের মুখে পড়েছেন রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। ক’দিন আগেই বিজেপির রাজ্য নেতা লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার ( JP Nadda) কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন যুব মোর্চার আইটি সেলের ইনচার্জ মণীশ বিসা। নাড্ডাকে পাঠানো বঙ্গ বিজেপির মণীশের ওই চিঠি গত সোমবার প্রকাশ্যে এসেছে।
[আরও পড়ুন: ‘অনুব্রতকে লটারির টিকিট বিক্রি করিনি’, সিবিআই জেরার পর বিস্ফোরক বিক্রেতা]
মণীশের দাবি, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ডা. ইন্দ্রনীল খাঁকে তিনি মৌখিক সব জানিয়েছেন। তাছাড়া, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী প্রত্যেকেই বিষয়টি জানেন। মণীশের অভিযোগ, রাজ্য বিজেপির আইনি সেলের ইনচার্জ লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় দলের কাজে সিকিমে তাঁর সঙ্গে যেতে বলেন। কিন্তু সিকিমে পৌঁছে মণীশ বুঝতে পারেন তাঁকে সংগঠনের কাজে নয়, ওঁর ব্যক্তিগত সেবক হিসাবে কাজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টিতে অবশ্য চরম অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি। দলের পুরনো নেতা-কর্মীরা দাবি করেছেন, ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হলে দলীয়স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ওই রাজ্য বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত বিষয়টি চলে যাওয়ায় বঙ্গ নেতারা যথেষ্ট চাপেও পড়ে গিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’। সেভ বেঙ্গল বিজেপি’র তরফে টুইট করে ঘটনাটিকে অমানবিক অ্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এই ঘটনার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। এদিকে, যাঁর নামে অভিযোগ সেই লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁকে যোগাযোগের চেষ্টাও করা হয়েছিল। এদিকে, লোকনাথ নিয়ে বিজেপির তরফে বক্তব্য, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী দু’পক্ষেরই বক্তব্য শোনা হবে। তবে, অভিযুক্ত দাবি করেছে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়য়ন্ত্র হয়েছে।