সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বিরোধী দলকে একত্রিত করার উদ্যোগ নিলেন, তখন অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। সিপিএমের (CPIM) বক্তব্য ছিল, এই ধরনের বৈঠক বিরোধী শিবিরের সবচেয়ে বড় দলেরই ডাকা উচিত। মমতা যেভাবে ‘আগ বাড়িয়ে’ বৈঠক ডেকেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে কংগ্রেস দিল্লির এই বৈঠকে আদৌ উপস্থিত হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল।
কিন্তু বুধবারের সফল বিরোধী বৈঠক সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে গেল। বিরোধীদের একত্রিত করার কাজে প্রথম পর্যায়ে অন্তত সফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর নেতৃত্বেই এক ছাতার তলায় চলে এল ১৭টি বিরোধী দল। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, মেহেবুবা মুফতির, মল্লিকার্জুন খাড়গের মতো নেতারা একজোট হয়ে গেলেন। মমতার ডাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একজোট হয়ে প্রার্থী দেবে বিরোধী শিবির।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়তে রাজি নন পওয়ার, কে হতে পারেন বিরোধীদের প্রার্থী?]
বস্তুত যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়ে এত লেখালেখি হল, তাঁরাও মমতার ডাকা বৈঠক এড়িয়ে যেতে পারেনি। সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) অসুস্থ থাকায় এদিনের বৈঠকে তিনজন বর্ষীয়ান নেতাকে পাঠায় কংগ্রেস। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশের মতো সিনিয়র নেতাও। বৈঠকে বিজেপি বিরোধী প্রায় সব দলই উপস্থিত ছিল। যে সিপিএম একদিন আগে পর্যন্ত মমতার এভাবে বৈঠক ডাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তাঁরাও এদিনের বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠায়। উপস্থিত ছিলেন অখিলেশ যাদব, মেহেবুবা মুফতির মতো নেতারাও। অখিলেশ (Akhilesh Yadav) তো বৈঠকে সবার সামনেই বলে দিয়েছেন, প্রার্থী নিয়ে মমতা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই তাঁর সিদ্ধান্ত হবে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি যে আস্থা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়েছেন, সেটা রাজনীতিতে বিরল।
[আরও পড়ুন: বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম জানতে চায় BJP! মমতাকে ফোন রাজনাথের, কথা নীতীশের সঙ্গেও]
এদিনের বৈঠক সর্বাত্মক হওয়ার ক্ষেত্রে সামান্য যা খটকা, সেটা হল আম আদমি পার্টি (Aam Aadmi Party) এবং টিআরএসের (TRS) অনুপস্থিতি। এদের আপত্তির কারণও কিন্তু মমতা নয়। এই দলগুলি এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিল না কারণ তারা কংগ্রেসের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে চায়নি। যদিও ১৭টি দল যেখানে উপস্থিত সেখানে এই সামান্য অনুপস্থিতি উপেক্ষা করা যেতেই পারে। মমতা নিজেই এদিনের বৈঠক শেষে বলেছেন, “আজকের বৈঠকে সবথেকে জরুরি বিষয় হল সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল এখানে এসেছে। মাত্র কয়েকটি দল আসেনি। তাঁদের নিশ্চয় কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল। সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই।”