সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর থেকেই বিশবাঁও জলে আদানি গোষ্ঠী। শেয়ারে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এহেন পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের দাবি জোরালো হয়েছে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)। চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে তারা। আমদানি করা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতা বন্ধেরও দাবি জানিয়েছে এই দুই সংগঠন। শুক্রবার এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে পরিবেশপ্রেমী সংগঠন দু’টি তাদের দাবির প্রতি সরকারকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় অর্ধেক ব্যবহার করা হচ্ছে না। তাই বিদেশি মুদ্রা খরচ করে বিদ্যুৎ আমদানির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তা ছাড়া আদানিদের কাছ থেকে যেসব শর্তে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কিনতে যাচ্ছে, তা দেশের জন্য খুবই প্রতিকূল।
[আরও পড়ুন: TikTok ভিডিও তৈরি নিয়ে দু’পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষে মৃত ১, উত্তপ্ত বাংলাদেশের শ্রীহট্ট]
উল্লেখ্য, শেয়ারে ধস নামার পর ভারতের শিল্পগোষ্ঠী আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশে (Bangladesh) রপ্তানি নিয়ে ওপার বাংলায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপ নির্মাণ করেছে ১৬০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে গত মাসেই বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন যে আদানি গোষ্ঠীর থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। এনিয়ে কোনও সংসয় নেই।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে ভারত (India) থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আসছে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং ত্রিপুরা দিয়ে কুমিল্লায় আসছে ১৬০ মেগাওয়াট। আদানির প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা গেলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে এক হাজার ৯৬০ মেগাওয়াটে। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা (এক হাজার ৪৯৫ মেগাওয়াট) গ্রিডে সরবরাহ হলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াটে, যা দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশ।