সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেহ হলেই আপনার পাঠানো চিঠি বা পার্সেল খুলে দেখতে পারবেন ডাককর্মী বা ডাক বিভাগের আধিকারিকরা। এমনকী সন্দেহ হলে শুল্ক দপ্তর বা পুলিশের কাছে সেই পার্সেল পাঠিয়েও দিতে পারবেন ডাক বিভাগের কর্মীরা। নতুন পোস্ট অফিস বিলে ডাক বিভাগের আধিকারিকদের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিল কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদি সরকার।
কেন্দ্রের দাবি, নতুন এই পোস্ট অফিস আইন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে দেখা গিয়েছে চিঠি বা পার্সেলের গোপনীয়তাকে ব্যবহার করে সমাজবিরোধীরা গোপন তথ্য আদানপ্রদান করেছে। অনেক সময় পার্সেলগুলিকে ব্যবহার করে মাদক বা বিস্ফোরক আদানপ্রদানের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। লেটার বম্ব, বা চিঠির মাধ্যমে বিস্ফোরক পাঠানোর মতো ঘটনা কিন্তু বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন নয়। এসব রুখতেই সন্দেহভাজন চিঠি বা পার্সেল খতিয়ে দেখার অধিকার দেওয়া হচ্ছে ডাককর্মীদের। ব্রিটিশ আমলে তৈরি ১৮৯৮ সালের ইন্ডিয়ান পোস্ট অফিস আইন তুলে দিয়ে নতুন আইন তৈরি করতে সংসদে পোস্ট অফিস বিল পেশ হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শিশিরের বিরুদ্ধে CBI তদন্ত? কুণাল ঘোষের আবেদনে পালটা চিঠি অমিত শাহর]
কিন্তু বিরোধীরা কেন্দ্রের যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁরা পালটা বলছে, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারতকে সার্ভাইলেন্স স্টেট বা নজরদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইছে। কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে বাম সব পক্ষেরই এক বক্তব্য, মোদি সরকার সব কিছুতেই নজরদারি চালাতে চাইছে।
[আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ ভুলে দুর্নীতি দূর করব’, সাক্ষাৎকারে অকপট বিধায়ক জেজে]
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, “মোদি সরকারের পোস্ট অফিস বিলে বলা হয়েছে ডাকঘরের অফিসারেরা কোনও পার্সেল আটক করতে পারেন, খুলে দেখতে পারেন, শুল্ক দপ্তর বা নিরাপত্তা সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দিতে পারবেন, আবার নষ্টও করে ফেলতে পারবেন। এই ধারা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে। দেশের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে কেন্দ্র নজরদারির ব্যবস্থা করতে চাইছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, ব্যক্তিগত পরিসর বা গোপনীয়তাকে সুপ্রিম কোর্ট মৌলিক অধিকারের তকমা দিয়েছে। এই বিল সেই অধিকারে আঘাত করে।