সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান এবং বিজেপি (BJP) যেন সমার্থক। সেই বিজেপির জোটসঙ্গীর মুখেই কিনা শোনা গেল রামচন্দ্র ভগবান নন, কেবল এক কাল্পনিক চরিত্র! বিহারের (Bihar) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝির এহেন মন্তব্য করার কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার বি আর আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে। অস্পৃশ্যতা সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভগবান রামচন্দ্র (Ramchandra) শবরী নামে এক দলিত মহিলার হাত থেকে ফল খেয়েছিলেন। তাহলে উচ্চবর্ণের মানুষ কেন এই উদাহরণ মেনে চলতে পারেন না? তাহলেই তো অস্পৃশ্যতা দূর হয়ে যেতে পারে।” প্রসঙ্গত, দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ শবরীকে শ্রদ্ধা করেন। কথিত আছে, রামচন্দ্রকে ফল খেতে দেওয়ার আগে তিনি নিজে প্রতিটি ফল খেয়ে দেখেন, যাতে ফল খাওয়া নিয়ে রামচন্দ্রের মনে কোনও সংশয় না থাকে। এই কথা বলার পরেই জিতন রাম বলেন, “আমি মনে করি না রামচন্দ্র ভগবান ছিলেন। তিনি বাল্মিকির রামায়ণ এবং তুলসীদাসের রামচরিতমানসের একটি কাল্পনিক চরিত্র। এই দু’টি বই থেকেই মূল্যবান নীতিশিক্ষা পাওয়া যায়।” এই বক্তব্য থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।
[আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তদের জন্য ছাড়তে হবে ঘর! নির্দেশিকা ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ সাংহাইবাসীর]
বিজেপির পক্ষ থেকে বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যসভা সাংসদ সুশীল কুমার মোদি বলেছেন, “নিজেকে শবরীর বংশজাত বলে দাবি করেন জিতন রাম। সেই তিনিই কিনা শবরী যাঁর আরাধনা করেছিলেন, সেই রামচন্দ্রের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এটা অত্যন্ত হাস্যকর।” বিহারের রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র নিখিল আনন্দ জানিয়েছেন, মাঝি কি নাস্তিক? যদি তিনি কোনও ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই ঈশ্বর কে?” বিজেপির তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে, এক দৈবিক সত্ত্বাকে এভাবে অপমান করলে আখেরে অভিশাপ নেমে আসবে। জিতন রাম কোন ধর্ম মেনে চলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রসঙ্গত, জিতন রামের রাজনৈতিক জীবনে সাফল্য আসে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেই। কংগ্রেস, আরজেডি প্রভৃতি দল পালটে ২০১৫ সালে তিনি নিজের দল গঠন করেন। এরপরে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে বসেন তিনি। বেফাঁস মন্তব্য করার জন্য ইতিমধ্যেই পরিচিত জিতন রাম। রাম জন্মভূমি আন্দোলনের মুখ হিসাবে পরিচিত বিজেপির জোটসঙ্গীর মুখে এই কথায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির।