সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই শতাব্দী ধরে ভারত শাসন করেছে ব্রিটেন। আর আজ সোমবার ইতিহাস তৈরি করে সেই ব্রিটেনেরই প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে জয়ী হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ব্রিটেনের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। এদিন টুইটারে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন পেনি মরড্যান্ট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এদিন ‘হাউস অফ কমন্স’-এ কনজারভেটিভ পার্টির (টোরিও বলা হয়) ৩৫৭ জন সাংসদের অর্ধেকেরও বেশি ঋষি সুনাকের (Rishi Sunak) পক্ষে ভোটদান করেন। লড়াইয়ে টিকে থাকতে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ১০০ জন এমপির ভোট টানতে ব্যর্থ হয়েছেন পেনি মরড্যান্ট। বলে রাখা ভাল, পেনি ১০০ জন এমপি-র সমর্থন পেলে লড়াই অন্য মাত্রা পেত। কারণ, তখন দেশজুড়ে থাকা কনজারভেটিভ পার্টির প্রায় দু’লক্ষ ভোটার অনলাইন ভোটিংয়ের মধ্যমে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতেন। আর তেমন হলে পেনি মরড্যান্ট কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতেন।
[আরও পড়ুন: আগ্রাসনে অভিযুক্ত সেনানায়কদের পদোন্নতি, ফের কি গালওয়ান চাইছেন জিনপিং?]
উল্লেখ্য, গতকাল শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নেন ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সেই জন্য সোমবারই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভারতের জামাইয়ের নামে সিলমোহর পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলই। বলে রাখা ভাল, ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতা মূর্তিকে বিয়ে করেছেন ঋষি। এবার ইতিহাস তৈরি করে তিনিই হলেন ব্রিটেনের প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী। ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন সুনাক বলে খবর। এদিন লন্ডনে কনজারভেটিভ পার্টির দপ্তরে দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
কয়েক মাস আগেই দলীয় বিদ্রোহে প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়তে বাধ্য হন বরিস জনসন (Boris Johnson)। ক্রিস পিনচার ইস্যুতে দলের অন্দরেই বেনজির বিক্ষোভের মুখে পড়েন বরিস। পরিস্থিতি জটিল করে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে ইস্তফা দেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ ও অর্থদপ্তরের প্রধান ঋষি সুনাক (Rishi Sunak)। তারপরই শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়। দিনকয়েকের জন্য মসনদে বসলেও শেষমেশ গদি ইস্তফা দিতে বাধ্য হন লিজ ট্রাস।
প্রসঙ্গত, দাদাভাই নওরোজি যেদিন জিতেছিলেন, তার ১২৩ বছর পরে, ২০১৫ সালে ব্রিটেনে আর-একটি সাধারণ নির্বাচন হয়। সেবারে ইয়র্কশায়ারে রিচমন্ড (ইয়র্কস) নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে কনজারভেটিভ প্রার্থী হিসাবে জয়ী হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ ঋষি সুনাক। সাউদাম্পটন শহরে জন্ম। এদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী, অভিজাত স্কুলগুলির একটি, উইনচেস্টার কলেজে পড়াশোনা। তারপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড। বাকিটা ইতিহাস।