নব্যেন্দু হাজরা: এবার আর গঙ্গার (Ganges) পাড়ে বসে শুধু হাওয়া খাওয়া নয়। কফির কাপে চুমুক আর স্যান্ডুইচে কামড় দিতে দিতে উপভোগ করা যাবে গঙ্গার সৌন্দর্য। ঠিক যেমনটা পারা যায় লন্ডনে টেমস নদীর ধারে। গুরুত্বপূর্ণ গঙ্গার ঘাটগুলোতে তৈরি হবে ক্যাফেটেরিয়া-রুফটপ রেস্তরাঁ। ১৪০টি ঘাটে বসবে ট্রান্সটাইল গেট। হবে যাত্রী বিশ্রামাগার, টয়লেটও। তাছাড়া যেখানে গঙ্গার ঘাট বরাবর রেললাইন আছে, সেখানে হবে ফুটওভার ব্রিজ। সিঁড়ির বদলে থাকবে এসকালেটর।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সেজে উঠছে গঙ্গাপাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটগুলো। ঘাট সংলগ্ন ৫০০ মিটার এলাকায় হবে সবুজায়ন। হবে ফুটপাথ, সেই সঙ্গে যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যের যাবতীয় ব্যবস্থা সেখানে করা হচ্ছে। ঘাট সংলগ্ন এলাকায় করা হবে অটোস্ট্যান্ড, বাইক-সাইকেল গ্যারেজ। নবান্নসূত্রে খবর, কেএমডিএ এলাকার মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ঘাটগুলো আরবান অগমেন্টেশন প্রোজেক্টের আওতায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ফেরিঘাটের দোতলায় তৈরি হবে ক্যাফেটেরিয়া বা রুফটপ রেস্তরাঁ। আর একতলা থাকবে যাত্রীদের ভেসেল থেকে ওঠা-নামা, যাতায়াতের জন্য। দোতলার অংশটি ভাড়া বা লিজ দেওয়ায় সেখান থেকে আয় হবে সরকারের।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রবল লড়াই, সিদ্ধান্ত নিতে দিল্লিতে বৈঠক কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের]
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, মিলেনিয়াম পার্ক, ফেয়ারলি, চাঁদপাল, রামকৃষ্ণপুর ঘাট, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বর, চন্দননগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘাটগুলো আধুনিকভাবে সেজে উঠবে। তবে দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠে ক্যাফেটেরিয়া হবে না। হবে বাকিগুলোতে। এর ফলে গঙ্গার হাওয়া খেতে খেতে সাধারণ মানুষ কফির কাপে চুমুক আর স্যান্ডুইচে কামড় বসাতে পারবেন। সেইসঙ্গে দেড়শোর কাছাকাছি ফেরিঘাটে মেট্রোর ধাঁচে ট্রান্সটাইল গেট বসানো হবে। ইতিমধ্যেই ২২টি ফেরিঘাটে এই গেট বসানো হয়েছে। তারমধ্যে ১৮টা অপারেশন রয়েছে। বছর কয়েক আগেই ফেয়ারলি—শিপিং এবং হাওড়ার ফেরিঘাটে ট্রান্সটাইল গেট বসানো হয়েছিল। সেগুলোর আধুনিকীকরণ হচ্ছে। এমনই গঙ্গার পাড়ে ১৪০টি ঘাটে এই গেট বসানো হবে। পরিকল্পনায় তেমনটাই রয়েছে। আগামী দিনে শুধু স্মার্ট কার্ড নয়, কিউআর কোড ব্যবহার করেও যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
নয়া এই গেট বসানো হলে ফেরিঘাটে টিকিটে কারচুপি বন্ধ হয়ে একদিকে যেমন আয় বাড়বে পরিবহণ দপ্তরের। তেমনই যাত্রীদেরও সুবিধা হবে। যে যাত্রীরা স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করবেন, তাঁদের আর টিকিট কাটার লাইনেও দাঁড়াতে হবে না নিয়মিত। সময় বাঁচবে।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিকে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে পর্ষদ]
বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় জলপথ পরিবহণকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। ভবিষ্যতে নামবে অত্যাধুনিক দূষণহীন ই-ভেসেল। তার পাশাপাশি হাওড়া, বারাকপুর, খড়দহের মতো কলকাতা ও শহরতলির ২৪টি জেটির আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি মেনেই তৈরি হবে ঘাটগুলি। সেইমতো ঘাটগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা চলেছে অনেক দিন ধরেই। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই ফেরিঘাটের হাল ফেরানোর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। পল্টন জেটি থেকে শুরু করে ঘাটে আলোর ব্যবস্থা। সবই থাকছে। পুরোপুরি লোহার জৈটি তৈরি করা হবে। এছাড়াও একাধিক নতুন জেটি তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে।