সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাফালে নিয়ে দিনভর ম্যারাথন শুনানির পর রায়দান আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন রাফালে চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এবং প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী অরুণ শৌরি। সরকারপক্ষের তরফে সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল। শুনানির প্রয়োজনে বায়ুসেনা আধিকারিকদেরও তলব করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। বায়ুসেনার তরফ থেকে আদালতে হাজির হন এয়ার ফোর্সের দুই শীর্ষ আধিকারিক।
[শীর্ষকর্তাদের অনুপস্থিতিতে দিশেহারা সিবিআই, থমকে মালিয়া-চোকসিদের তদন্ত]
শুনানির শুরুতে কেন্দ্রকে একের পর এক ইস্যুতে কাঠগড়ায় তোলেন মামলাকারীরা। তাদের দাবি, রাফালের দাম প্রকাশ্যে আনা জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু নয়, জাতীয় নিরাপত্তার আড়ালে কেন্দ্র পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। রাফালে চুক্তির অফসেট পার্টনার বাছার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় মামলাকারীদের তরফে। এমনকি পুরো চুক্তির পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন আইনীজীবী প্রশান্ত ভূষণ। প্রশান্ত ভূষণের প্রশ্নের উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, রাফালের দাম এবং তা নির্ধারণের প্রক্রিয়া প্রকাশ্যে এলে শত্রু দেশ তার সুবিধা নিতে পারে। তাই রাফালের দাম নির্ধারণ নিয়ে আদালতে আর কোনও তথ্য দেব না। কারণ কোনও তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে আমি এবং আমার দপ্তরের উপর তার দায় বর্তাবে। গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য আমি নিজেও এই কাগজপত্র দেখিনি।’’ এরপরই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়ে দেন, আপাতত রাফালের দাম নিয়ে কোনওরকম শুনানি করবে না আদালত। আদালত চাইলে তবেই এই নিয়ে পরবর্তীকালে শুনানি করা যাবে।
[নেহেরুর জন্যই চা-ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, মোদিকে কটাক্ষ থারুরের]
দাম ইস্যুতে কিছুটা স্বস্তি পেলেও রিলায়েন্সকে অফসেট পার্টনার বেছে নেওয়া এবং চুক্তির শর্ত-সহ একাধিক ইস্যুতে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে। কেন ২০১৫ সালে অফসেট চুক্তি বদলানো হয়েছিল, অফসেট পার্টনার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা কী? আর এই চুক্তি বদলে দেশের কী উপকার? যদি, সংস্থা রাফালে সরবরাহ না করে তাহলে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে? আদালতের প্রশ্নের উত্তরে সরকার স্বীকার করে নিয়েছে, সংস্থা বা ফ্রান্স সরকার কোনওপক্ষই রাফালে সরবরাহের নিশ্চয়তা নিয়ে কোনও লিখিত দেয়নি, তবে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
দীর্ঘ বাদানুবাদের পর সরকারপক্ষের একাধিক অস্বস্তি বাড়িয়েও শেষ পর্যন্ত রায়দান করেনি সর্বোচ্চ আাদলত। আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পরবর্তী শুনানিতেই জানা যাবে, রাফালে মামলায় কোনও বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে কিনা। এদিকে, মামলাকারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চুক্তিতে যতরকম গড়মিল রয়েছে বলে তারা মনে করছেন তা লিখিত আকারে পেশ করতে।