সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: কোনও টেন্ডার ছাড়াই বেআইনিভাবে দশ-বারো বছরের পুরনো লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ বিডিওর বিরুদ্ধে। গাছ কাটার আগে বনদপ্তরের থেকে কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মগরাহাটের (Magrahat) ১ নম্বর ব্লকের উস্তিতে। মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছেও এবিষয়ে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিডিওর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্তও। এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় উস্তিতে।
মগরাহাট ১ নম্বর ব্লক অফিসের পিছনে শ্রীচন্দা-উস্তি খালের ধারে ছিল বহু পুরনো দিনের মেহগিনি, ইউক্যালিপটাস ও সোনাঝুরি গাছ। স্থানীয়রা শনিবার রাত থেকে লক্ষ করেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। রবিবার ভোরবেলায় বেশ কিছু মূল্যবান গাছের গুঁড়ি ও কাঠ সেখান থেকে মোটরভ্যানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও বাসিন্দারা প্রতিবাদ করে। বাকি গাছগুলি নিয়ে যেতে বাধা দেন। তাঁদের অভিযোগ, টানা তিনদিন সরকারি ছুটি থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কেটে বিক্রি করে ফেলা হচ্ছে বহু পুরনো দিনের বড় বড় গাছ।
[আরও পড়ুন: বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ, ব্লেড হামলায় ক্ষতবিক্ষত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, পড়ল ৩২টি সেলাই]
স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী রাজু গাজীর অভিযোগ, বিডিওর নির্দেশেই প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকার ওই গাছগুলি কোনও টেন্ডার ছাড়াই কেটে কাঠগোলা মালিকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বনদপ্তরের কোনও অনুমতিও নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি বিডিও। পুরো বিষয়টি স্থানীয় উস্তি থানায় জানানো হয়েছে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসকের কাছেও। একজন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওঠা এহেন বেআইনি কাজের বিষয়ে তদন্ত করে অবিলম্বে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী একটি সংগঠন।
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে জানতে রবিবার অভিযুক্ত বিডিও ফতেমা কাওসরকে ফোন করা হলেও তিনি প্রথমবার ফোনই ধরেননি। দ্বিতীয়বার আবার ফোন করলেও তাঁর ফোন ছিল সুইচড্ অফ। এবিষয়ে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা জানান, বিডিওর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযোগের সত্যতা।