সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মহাকাশ-বর্জ্য’ (Space debris) ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে বহুদিন ধরেই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। এই পরিস্থিতিতে এবার জানা গেল, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA মহাকাশে সম্প্রতি বিপুল পরিমাণে বর্জ্য নিক্ষেপ করেছে। সব মিলিয়ে যার ওজন ২.৯ টন! বলা হচ্ছে, এত পরিমাণে বর্জ্য এই প্রথম নিক্ষিপ্ত হল মহাকাশে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকেই ওই বর্জ্য নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বাতিল ব্যাটারি।
ভবিষ্যতে কী হবে এই বর্জ্যের? প্রশ্ন উঠছে, এর থেকে কি সরাসরি মানব সভ্যতার কোনও বিপদ হতে পারে? বিজ্ঞানীরা অবশ্য সেব্যাপারে আশ্বস্ত করছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ বছর ধরে পৃথিবীর কক্ষপথে চক্কর কাটবে ওই বর্জ্যগুলি। পরে তা প্রবেশ করবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। তার মানে এই নয় যে, রাতারাতি সেটা আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর মাটিতে। আসলে বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ার পরই তা জ্বলে উঠে ছাই হয়ে যাবে। সুতরাং সেই ধরনের কোনও বিপদের কোনও রকম আশঙ্কা নেই।
[আরও পড়ুন: মহাকাশে আমেরিকাকে টক্কর, চাঁদে স্পেস স্টেশন তৈরি করবে চিন ও রাশিয়া]
তবে মহাকাশ-বর্জ্য থেকে অন্য ধরনের বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে পাক খেতে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহগুলির সঙ্গে এই ধরনের বর্জ্যের কোনও টুকরোর সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, সব মিলিয়ে পৃথিবীর চারপাশে এই মুহূর্তে চক্কর কাটছে ১৬ কোটি মহাকাশ-বর্জ্যের টুকরো। সেগুলির গতি ঘণ্টায় ১৮ হাজার মাইল। তবে এগুলির অধিকাংশই খুব ছোট আকারের। তাদের থেকে বিপদের সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এদের মধ্যে অন্তত ১০ লক্ষ টুকরোর দৈর্ঘ্য ১ সেন্টিমিটারের বেশি। ভয় সেগুলিকে নিয়েই।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, কোনও একটি উপগ্রহের সঙ্গেও যদি এদের কারও ধাক্কা লাগে তাহলেই মহা অনর্থ ঘটে যেতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে সারা পৃথিবীর উপগ্রহ পরিষেবার প্রযুক্তি। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে ২ হাজার ৮০০ উপগ্রহ। তার সঙ্গেই চক্কর কাটছে ৩ হাজার বাতিল উপগ্রহ।