সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি ভবন এখন জনতার দখলে। প্রাণ ভয়ে বাসভবন ছেড়েছেন দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। শনিবার দুপুরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ভেঙে রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নেয় বিক্ষোভকারীরা। দেশের এই অচলাবস্থা কাটাতে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি সরব হয়েছেন রাজাপক্ষের দলেরই ১৬ সাংসদ। সবমিলিয়ে প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রে তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করছে দেশবাসী।
সে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ডামাডোলের জেরে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের (Sri Lanka President Gotabaya Rajapaksa) পদত্যাগের দাবিতে সরব জনগণ। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে পারে তারা, এই আশঙ্কায় শ্রীলঙ্কার রাজধানীতে কারফিউ জারি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে তা আগেই আঁচ করেছিল পুলিশ-সেনা। তাই আগেভাগেই রাজপ্রাসাদ ছাড়েন গোতাবায়া। সূত্রের খবর, সেনার সদরদপ্তরে আশ্রয় নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি।
এদিকে প্রশাসনের বাধা মানেনি উন্মত্ত জনতা। রেল কর্তৃপক্ষকে ট্রেন চালাতে বাধ্য করা হয় যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা শনিবার রাজধানী কলম্বোর প্রতিবাদ মিছিলে পৌঁছে যেতে পারে। রাত বাড়তেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে ফেলে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষোভ বাড়তেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে তারা। ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: ‘আগে জানলে দ্রৌপদীকে সমর্থন করা যেত’, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে দাবি যশবন্তের]
এদিন দুপুরে গড়াতেই হাতে পতাকা নিয়ে কাতারে কাতাকে আন্দোলনকারীরা নিরাপত্তার বলয় ভেঙে রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকে পড়েন। দখল নেন প্রাসাদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি ভবনের সুইমিং পুলে নেমে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ঘরেরও দখল নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও নিজের পদ ছাড়তে নারাজ গোতাবায়া রাজাপক্ষে। ফলে এই ডামাডোল আরও বাড়ছে।
বিদেশি ঋণের বোঝায় ভেঙে পড়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি (Sri Lanka Crisis)। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের জ্বালানি ব্যবস্থা। শ্রীলঙ্কায় বিদেশি মুদ্রার অভাবের জন্য অন্য দেশ থেকে তেল কিনতে পারছে না তারা। ফলে তেলের অভাবে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিটি পেট্রল পাম্পে তেল কিনতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কাবাসী। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অন্তত দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের সমস্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করছেন আমজনতা। এমন পরিস্থিতিতে সে দেশের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ।