ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের গুরুত্ব সর্বাধিক। নানা দিক থেকে লড়াইয়ের কেন্দ্রে চলে আসছে নন্দীগ্রাম। এই কেন্দ্র থেকে লড়বেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতিও। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছিল সেখানে। এবার দলের ফোকাসেও মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর কেন্দ্রে। তৃণমূলের অন্যতম বর্ষীয়ান, অভিজ্ঞ নেতা তথা রাজ্যের আরেক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে (Subrata Mukherjee) দেওয়া হল বাড়তি দায়িত্ব। সূত্রের খবর, ভোটের আগে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের তরফে সমীক্ষা শুরু হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির পয়লা থেকেই সেই কাজে নামছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে নন্দীগ্রাম থেকে জিতেছিলেন এখনকার বিজেপি নেতা, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। কিন্তু তারপর রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের মূল আন্দোলন স্থলের রাজনৈতিক চিত্রে বদল এসেছে অনেক। তৃণমূলের সঙ্গে দীর্ঘ দু দশকের সম্পর্কে ইতি টেনে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই বারবার তৃণমূলকে হারানোর হুঁশিয়ারি শোনা যাচ্ছে তাঁর গলায়। ১৮ তারিখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করার পর তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন, আধ লক্ষ ভোটে মুখ্যমন্ত্রীকে হারাবেন। এরপরই গুঞ্জন ওঠে, তাহলে কি নন্দীগ্রামে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন শুভেন্দুই? এবারের বিধানসভা ভোটের কেন্দ্র তাহলে মমতা বনাম শুভেন্দুর লড়াই?
[আরও পড়ুন: ভাঙন রোখার চেষ্টা! অমিত শাহর সফরের আগেই দলের সাংসদ-বিধায়কদের তলব মমতার]
এসব প্রশ্নই যখন ঘোরাফেরা করছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরে এবং আমজনতার দরবারেও, ঠিক সেসময় নন্দীগ্রামকে ফোকাসে রেখে বিশেষ প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের খবর, শুভেন্দুর শিবির বদলের পর নন্দীগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে তৃণমূলের সংগঠনও খানিকটা দিশেহারা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ। ভোটের আগে সেসব জট খোলা না হলে তার প্রভাব পড়তেই পারে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর, এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, নন্দীগ্রাম প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা করার। তাঁর কথায়, ”আমি নন্দীগ্রামে গিয়ে প্রত্যেক বুথে বুথে যাব। বাড়ি বাড়িও ঘুরে জনগণের মতামত শুনব। সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি বুঝব।” ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ তিনি যাবেন নন্দীগ্রাম। তিনদিন থেকে যাবতীয় সমীক্ষা করার পর দলকে জানাবেন তাঁর নিজের পর্যবেক্ষণ।