সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে (Afghanistan) মহিলাদের উচ্চশিক্ষার রাস্তা স্তব্ধ করে ফতোয়া জারি করেছে তালিবান (Taliban)। সেদেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষিত আফগানরা। ইস্তফা দিয়েছেন ৬০ জন অধ্যাপক। এর মধ্যেই গত ডিসেম্বরে একটি লাইভ টিভি শো-তে নারী শিক্ষায় তালিবানি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে অধ্যাপক ইসমাইল মাশাল (Ismail Mashal) নিজের ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলেন। প্রতিবাদের দাম দিতে হল তাঁকে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অধ্যাপককে বেধড়ককে মারধর করে তালিবান পুলিশ। বর্তমানে তাঁকে অজ্ঞাত জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে। অধ্যাপককে আটকের কথা স্বীকার করেছে তালিবান সরকার।
একাধিক আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে লেকচারারের কাজ করেছেন ইসমাইল মাশাল। টিভি শোতে তাঁর প্রতিবাদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল গোটা বিশ্বে। স্বভাবতই ওই ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুখ পোড়ে তালিবান প্রশাসনের। এর ফলেই অধ্যাপকের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁর সহায়ক ও পরিবারের লোকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, নির্মম ভাবে মারধর করা হয়েছে অধ্যাপককে। এর পর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কোথায়, কোন জেলে তাঁকে রাখা হয়েছে তা জানা যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: তালিবান হামলার টার্গেট মুম্বই! এনআইএ দপ্তরে হুমকি ইমেল, বাড়ল নজরদারি]
শিক্ষকের মাশালের বিষয়ে তালিবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আবদুল হক হামাদ টুইট করেন, “শিক্ষক মাশাল কিছুদিন ধরে রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। তদন্তের খাতিরে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে আটক করেছে।” মার্শালের সহায়ক ফাজিল বলেন, “কোনও অপরাধ করেননি, তথাপি মাশালকে আটক করা হয়েছে। গত তিন দশক ধরে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার তিনি। ছেলেমেয়েদের বিনামূল্য বই বিলোতেন। সেই মানুষটা এখনও বন্দি। কোন জেলে আটকে রাখা হয়েছে তাও জানা যাচ্ছে না।”
[আরও পড়ুন: জেলে বসে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম, প্রাক্তন ULFA ছাত্রনেতা হলেন সোনার ছেলে]
নারী শিক্ষায় তালিবানি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলা নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় মাশাল বলেছিলেন, “একজন সহনাগরিক এবং শিক্ষক হিসেবে আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে এই সার্টিফিকেটগুলো অর্থহীন।” সেই কারণেই টিভি শোতে সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ করেন।