সুব্রত বিশ্বাস: সেবাই মূল উদ্দেশ্য। তাই রোগীর চিকিৎসাকেই জীবনের পাথেয় করেছেন এই তৃণমূল প্রার্থী। আরও বড় পরিসরে মানুষের সেবা করতে তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন বালির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রাণা চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে চিকিৎসায় ভাঁটা পড়ুক চান না। তাই নিজের চেম্বারে টাঙিয়ে দিয়েছেন এক পোস্টার। আবেদন করা হয়েছে, রাজনৈতিক আলোচনার জন্য কেউ চেম্বারে আসবেন না। এমন আবেদনে দলের অনেকেই ভ্রু কোঁচকালেও খুদে রোগীদের অভিভাবকরা বেজায় খুশি। ডাক্তার রাণা চট্টোপাধ্যায়ের সাফ জবাব,”আমি চিকিৎসক। বহু শিশু আমার রোগী। তাদের চিকিৎসা ব্যাহত হোক আমি চাই না। শিশুদের মা-বাবার দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে জনসেবায় মন বসানো সম্ভব নয়।” তাই এই পোস্টার টাঙানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রার্থী ঘোষণার দিন থেকে দলীয় সমর্থকদের ঢল নেমেছিল ডাক্তার রাণা চট্টোপাধ্যায়ের চেম্বারে। ফলে চিকিৎসায় বিলম্ব হচ্ছিল। তাই রোগী ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে চেম্বারে না আসার আবেদনের নোটিশ লাগাতে বাধ্য হন তিনি। রাণা চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মানবদরদী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। জনসেবা চালিয়ে যেতে চান তিনি। তৃণমূল প্রার্থী আরও জানান, “কোভিড বিদায় নেয়নি। তাই ভিড় বাড়লে সংক্রমণ বাড়তে পারে। যা শিশুদের পক্ষে বিপজ্জনক।” তাঁর এই উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন তৃণমূলের মন্ত্রী অরূপ রায়ও। তিনি মনে করেন, “একজন চিকিৎসকের চিকিৎসার দায়বদ্ধতা সবার আগে। তাঁর কাছে সব দলের রোগী আসবেন এটাই স্বাভাবিক। চেম্বারে দলীয় কর্মসূচি, আলোচনা সেই কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রার্থী একজন বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। তাঁর কাছে হাওড়া, হুগলির বহু শিশু আসে। এই সেবাই তাঁর জনসংযোগের কাজ করবে।”
[আরও পড়ুন : ‘একটি পিঁপড়েও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যায়নি, হামলার অভিযোগ সাজানো’, বিস্ফোরক শিশির]
বালিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পক্ষে দাবি তোলা হয়েছিল, বহিরাগত ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যেন প্রার্থী করা না হয়। রাণাবাবু ‘ভূমিপুত্র’ অবশ্যই কিন্তু রাজনীতি তাঁকে ছুঁতে পারেনি। এবার তিনি প্রার্থী হওয়ায় বালির তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বিতর্ক দানা বেধেছিল। যা পরে দলীয় আলোচনায় মিটে যায়। ২০১১ ও ২০১৬ সল্টলেকের বাসিন্দা প্রাক্তন আইপিএস সুলতান সিং ও বেহালার বাসিন্দা বৈশালী ডালমিয়া বালির বিধায়ক হয়েছিলেন। কর্মীদের অভিযোগ, দুই বিধায়কের নাগাল পাওয়া বালির বাসিন্দাদের কাছে দুঃসাধ্য ছিল। এবার সেই সমস্যা হবে না বলে মনে করেছেন বিদায়ী কাউন্সিলররা।
[আরও পড়ুন : বিজেপিতে যোগ দিয়ে এলাকায় ফিরেই বিক্ষোভের মুখে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা, দেখানো হল জুতো]
আরজি কর মেডিক্যালে ছাত্রাবস্থা ও জুনিয়র চিকিৎসক হিসাবে কাজ করার সময় ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।পাশাপাশি বহু জনসংযোগমূলক ও সেবামূলক কাজে তিনি বরাবরই যুক্ত থেকেছেন। লকডাউনের সময়কালে ও আমফান বিধ্বস্ত এলাকায় বহু সেবামূলক কাজকর্ম করেছেন তিনি। বন্যার সময় গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেছেন। মাঝে মধ্যে সময় পেলে অনাথ আশ্রমে গিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গেও মিশে যাব এই ডাক্তারবাবু। এবার ব্যাপ্তিকে আরও প্রশস্ত করতে সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিলেন তিনি।