অর্ণব আইচ: বন্ধুর বাইক চেয়ে নিয়ে কলেজের সামনে দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে বেরিয়ে যাওয়া। পিছনে রয়েছে কলেজের বান্ধবী। কিন্তু কারও মাথায় হেলমেট নেই। বাইকের লাইসেন্সও বন্ধুর কাছে। আবার বাইক নিজের হলেও হেলমেটের তোয়াক্কা করছে না কলেজের বহু ছাত্র। বাইক উঠে আসছে স্কুলের ছাত্রদের হাতেও। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হেলমেটহীন বাইক আরোহীরা ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে উঠে এসেছে একের পর এক এই ধরনের তথ্য। অফিসাররা দেখতে পেয়েছেন, বহু ছাত্র-ছাত্রীই হেলমেট পরতে রাজি নয়। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ পুলিশও। তাই এবার শহরের কলেজের ছাত্রদের হাতে হেলমেট তুলে দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। হেলমেট ‘উপহার’ দেওয়া হচ্ছে ছাত্রীদেরও। হেলমেট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও।
[ আরও পড়ুন: বাইকে চেপে পরপর শ্লীলতাহানি, জলের জ্যারিকেনই ধরিয়ে দিল ‘সাইকো’কে]
লালবাজার সূত্র জানা গিয়েছে, সোমবার শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে হেলমেট তুলে দেন পুলিশকর্তারা। প্রায় দেড়শো হেলমেট এই কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে লালবাজার। এই বিষয়ে এক ট্রাফিক কর্তা জানান, তরুণরা যাতে হেলমেট পরেই বাইক চালান, বিভিন্নভাবে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই একটি অংশ হিসাবে কলেজগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে হেলমেট। সাধারণত দিনের বেলায় নাকা না চললেও আইনভঙ্গকারী বাইক আরোহীদের উপর বিশেষ নজর থাকে পুলিশের। তাতে দেখা গিয়েছে, বেপরোয়াভাবে বাইক চালানো থেকে শুরু করে হেলমেট না পরে বাইক চালানো, একাজে একটা বড় প্রবণতা রয়েছে কলেজের ছাত্রদের। বাইক চালকদের সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা পিছনের সিটে বসেন, তাঁদের মাথায়ও থাকে না হেলমেট। ট্রাফিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর অনেকেই নিজেদের কলেজের ছাত্র বলে পরিচয় দেয়। তাদের অনেকের কাছে কলেজের পরিচয়পত্র থাকলেও থাকে না বাইকের লাইসেন্স। আবার পুলিশ দেখে পালানোর প্রবণতাও থাকে অনেক মধ্যে।
[ আরও পড়ুন: পুজো মণ্ডপ তৈরির জন্য কাটা হল গাছ! বিতর্কে টালা পার্ক প্রত্যয় ]
শহরের বহু কলেজের কাছে গিয়ে সমীক্ষা করে ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিকরা দেখেছেন, হেলমেট ছাড়াই বাইকে করে কলেজ থেকে বের হচ্ছে ছাত্ররা। বেরিয়েই গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে তারা। অনেকে আবার পছন্দ করে স্টান্টও। এবং সেই স্টান্ট থেকেও ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি প্রায় প্রত্যেক রাতেই শহরজুড়ে চলছে নাকা। নাকায় হেলমেট না পরে বা এক বাইকে তিনজন আরোহী ধরা পড়েছে৷ যা থেকে জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যেও অনেকে কলেজের ছাত্র। তখনই লালবাজারের কর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, সাধারণভাবে একেকটি কলেজে গড়ে শ’দেড়েক ছাত্র বা ছাত্রীর স্কুটি ও বাইক রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের হেলমেট দেওয়া হলে তারা হেলমেট পরতে বাধ্য থাকবে। পরবর্তী সময় যদি হেলমেটহীন অবস্থায় ধরা পড়ে, তবে তাদের কিছু বলারও থাকবে না। এর আগেও ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তায় বাইক আরোহীদের হেলমেট দেওয়া শুরু হয়েছিল। তবে কলেজ ছাত্রদের হেলমেট দেওয়া অনেক বেশি কার্যকর বলে ধারণা পুলিশকর্তাদের। লালবাজার সূত্র খবর, ইতিমধ্যেই নিয়ে আসা হয়েছে হাজারের উপর হেলমেট। কলেজের পর প্রয়োজনে কয়েকটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র, যাদের বাইকের লাইসেন্স রয়েছে, তাদের হাতেও হেলমেট তুলে দেওয়া হতে পারে।
The post বিপদ ডাকছে বেপরোয়া গতি, সচেতনতা বাড়াতে ছাত্রদের হেলমেট বিলি পুলিশের appeared first on Sangbad Pratidin.