shono
Advertisement

সাবধান! অতিরিক্ত ধূমপানে ক‌্যানসার বাসা বাঁধতে পারে কিডনিতেও

সচেতন থাকতে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি। The post সাবধান! অতিরিক্ত ধূমপানে ক‌্যানসার বাসা বাঁধতে পারে কিডনিতেও appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:45 PM Nov 01, 2019Updated: 09:13 PM Nov 01, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরুষরা সবচেয়ে বেশি যেসব ক‌্যানসারে আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে ছ-সাত নম্বর স্থানে আছে কিডনি ক‌্যানসার। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ক‌্যানসারের স্থান আট বা ন’ নম্বরে। এর থেকে বোঝা যায়, অন‌্যান‌্য ক‌্যানসারের চেয়ে কিডনি ক‌্যানসার হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম। এটুকু জেনে স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনি ক‌্যানসার শনাক্ত করতে দেরি করে ফেলেন অনেকে। ততদিনে কিডনি ছেড়ে ক‌্যানসার ফুসফুস, পেটে হয়তো ছড়িয়ে পড়ে পরিস্থিতি হাতছাড়া হয়ে যায়। তাই এই ক্যানসারের লক্ষণ জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement

লক্ষণ: 
একদম প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি ক্যানসারের তেমন কোনও উপসর্গ চোখে পড়ে না। একটু বেড়ে গেলে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরতে থাকে। যা একেবারে যন্ত্রণাহীন। তাই দু-একদিন অন্তর বা সপ্তাহে কয়েক দিন এরকম প্রস্রাবের সঙ্গে ব্লিডিং হলে সাবধান। এটা কিন্তু কিডনি ক্যানসার হতে পারে। তবে এই ব্যথাহীন ব্লিডিং হলে ক্যানসার কিডনি ছেড়ে এখনও অন্য অঙ্গে ছড়ায়নি। তখন দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যায়। ক্যানসার ছড়িয়ে গেলে তখন যে অংশে থাবা বসিয়েছে সেই অংশ থেকে নানারকম সমস্যার লক্ষণ দেখা যায়। ধরা যাক, কারও ফুসফুসে ছড়িয়েছে তখন খুব কাশি, শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। ব্রেনে ছড়ালে অসহ্য মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। মূলত ফুসফুস ও পেটের ভিতরে কিডনির পিছনের দিকে কিছু ব্লাড ভেসেলের লিম্বে কিডনি ক্যানসার ছড়াতে পারে।

[আরও পড়ুন: ৪০ রকমের রোগ প্রতিরোধে চার মাস খান চোদ্দ শাক]

পুরুষরা অনেক সময় প্রস্রাবের সঙ্গে এই ব্লিডিংকে প্রস্টেট, ব্লাডার বা ইনফেকশনের সমস্যা বলে ধরে নেন। চিকিৎসা হয় ভুল পথে। প্রস্রাবের সময় ব্লিডিং হলে এবং তখন জ্বালা করলে বুঝতে হবে তা কিডনি ক্যানসার নয়। অন্য কোনও সমস্যা।

কারণ:
এই ক্যানসার হওয়ার প্রকৃত কারণ বলে নির্দিষ্ট কিছু নেই। তবে যাঁরা অতিরিক্ত সিগারেট খান তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অন্যদের চেয়ে একটু বেশি। তাই কিডনি ক্যানসার এড়াতে ধূমপানের অভ্যাস ছাড়া ভাল। অনেকে ভাবেন ধূমপান ছাড়লে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এটা যেমন ঠিক, তেমনই একইভাবে কিডনি ক্যানসারের রিস্কও অনেকটা কমানো যায়। এছাড়া দেখা গিয়েছে যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা বেশি তাঁদেরও ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। কিছু ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণেও হতে পারে। তবে তার সংখ্যা খুবই কম।

কিডনিতে লাম্প:
কিডনি ক্যানসার চট করে ধরা পড়ে না। অন্য কোনও সমস্যার জন্য পেটে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান করতে গিয়ে হয়তো এই ক্যানসার ধরা পড়ে। মূলত এই টেস্টগুলি করতে গিয়ে দেখা যায়, কিডনির উপর ছোট একটা অংশ ফুলে আছে বা লাম্প হয়ে আছে। তখনই সেদিকে নজর যায় চিকিৎসকের। তারপর ওই লাম্পের কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করে হয়তো ধরা পড়ে ক্যানসার। সব সময় যে এই লাম্পগুলি ক্যানসারযুক্ত হয় তা নয়। তবে যদি তাতে ক্যানসার থাকে তবে তা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যানের সময় বিশেষ কিছু সংকেত দেখে শনাক্ত করতে পারেন রেডিওলজিস্টরা।

কোন টেস্টে ধরা পড়বে:
প্রস্রাবের সঙ্গে ব্লিডিং বা অন্য কোনও কারণে কিডনি ক্যানসারের আশঙ্কা করলে প্রথমেই উচিত কেইউবি সিটি স্ক্যান করানো। এতে সবচেয়ে ভাল বোঝা যায়। সাধারণত কিডনি, প্রস্রাবনালি, ব্লাডারে কোনও অসুখ করলে প্রস্রাবের সময় ব্লিডিং হয়। তাই এই অংশে বিশেষ নজর দিতে এই কেইউবি সিটি স্ক্যান করা হয়। একে আবার তলপেটের সিটি স্ক্যানও বলা যায়। যখন রেডিওলজিস্টরা সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেখেও কিডনি ক্যানসার হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেন না তখন এমআরআই করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অনেক সময় কিডনির লাম্প খুব অদ্ভুত দেখতে হলেও এমআরআই করে দেখতে হয়। তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যানেই কাজ হয়ে যায়। এরপর অঙ্কোলজিস্টরা আরও কিছু টেস্ট করে দেখে নেন আর কোথাও ক্যানসার ছড়িয়েছে কি না। মূলত বুক ও পেটের আরও কিছু টেস্ট করে নেওয়া হয়।

চিকিৎসা:
কিডনিতে লাম্প হলে এবং সিটি স্ক্যান রিপোর্টে ক্যানসার হয়েছে বলে নিশ্চিত হলে প্রথমেই তা সার্জারি করে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। অন্য ক্যানসারে যেমন বায়োপসি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা করার দরকার নেই। কারণ স্ক্যান রিপোর্টই ভরসাযোগ্য। ক্যানসার কতটা ছড়িয়েছে তা দেখে নিয়ে কোন অংশে কতটা অপারেশন করা হবে তা ঠিক হয়। ক্যানসার যদি শুধুমাত্র কিডনিতেই অনেকটা অংশজুড়ে থাকে এবং তা ভবিষ্যতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে তবে গোটা কিডনিটাই কেটে বাদ দেওয়া হয়। একে নেফ্রেকটমি বলে। এক্ষেত্রে অন্য কিডনির সাহায্যে রোগী দিব্যি ভাল থাকতে পারেন। আবার অনেক সময় কিডনির অল্প অংশজুড়ে ক্যানসারযুক্ত লাম্প থাকলে তা কিডনির ওই অংশটুকু থেকে শুধু বাদ দেওয়া হয়।

[আরও পড়ুন: জরায়ু ত্রুটিপূর্ণ? সুস্থ সন্তানলাভের জন্য এগুলি মেনে চলুন]

একটা স্বস্তির কথা হল, দুটি কিডনির মধ্যে যে কিডনিটাতে ক্যানসার থাবা বসায়, শুধুমাত্র সেটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপর কিডনিটি একদম ঠিক থাকে। এমনকি আক্রান্ত কিডনি থেকে অন্যত্র ক্যানসার ছড়ালেও দ্বিতীয় কিডনিতে ছড়ানোর কোনও আশঙ্কা থাকে না। কিডনি থেকে কোথাও না ছড়ালে রোগীর প্রাণহানির রিস্ক অনেকটা কমে যায়। অবশ্য বর্তমানে এমন কিছু উন্নতমানের কেমো বা টার্গেটেড থেরাপির কিছু বিশেষ ধরনের ওষুধ বেরিয়েছে যার দ্বারা অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসারের চিকিৎসাও ভাল হচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে অন্য অংশে ক্যানসারের স্পট পাওয়া গেলে রেডিয়েশন দিয়ে তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একদিন বা তিনদিন বা পাঁচদিন এভাবে রেডিওথেরাপি করে ক্যানসার নির্মূল করা হয়। কিডনি থেকে ক্যানসার ব্রেন, ফুসফুস, হাড়ে ছড়ালে সাধারণত রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হয়। দক্ষ রেডিওলজিস্টের ভূমিকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

পরামর্শ: ৯৮৩১১৭১২৩৫

The post সাবধান! অতিরিক্ত ধূমপানে ক‌্যানসার বাসা বাঁধতে পারে কিডনিতেও appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement