সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেহাদি নেটওয়ার্কের মাঝখানে পাকিস্তান নাকি মাকড়সা! আর মাকড়সা কখনও নিজের জালে জড়ায় না। কিন্তু পাকেচক্রে পড়ে ইসলামাবাদের অবস্থা শোচনীয়। ‘মানসপুত্র’ তালিবদের কাবুল দখলে মদত দিয়ে এবার হাত কামড়াচ্ছে দেশটি। কারণ, তালিবান শাসনে তুঙ্গে পৌঁছেছে সীমান্ত সংঘাত। ফলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়েছে।
আল জাজিরা সূত্রে খবর, গত সোমবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তোরখাম বর্ডার ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান প্রশাসন। এর ফলে মাথায় হাত পড়েছে বহু পাক ব্যবসায়ীর। তোরখামে আটকে রয়েছে প্রায় ৬ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক। প্রচুর খাবার সামগ্রী প্রায় পচে যাওয়ার জোগাড়। একে অপরের দিকে বন্দুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের সেনা। গত সোমবার পাকিস্তানের দিক থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং আফগানিস্তানের তরফে নানগরহার প্রদেশে অবস্থিত তোরখাম বর্ডার ক্রসিংয়ে তালিবানের সঙ্গে ভয়াবহ গুলির লড়াই হয় পাক সীমান্তরক্ষীদের। তারপর থেকেই সীমান্তে পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আফগান রোগীদের পেশোয়ার যেতে বাধা দেয় পাক সীমান্তরক্ষীরা। আর এতেই ক্ষুব্ধ তালিবান। তোরখামের তালিবান প্রশাসনিক প্রধান মোল্লা মহম্মদ সিদ্দিকের বক্তব্য, “প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে পাকিস্তান (রোগীদের প্রবেশ আটকে)। তাই এই বর্ডার ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘সংবাদমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিন’, BBC’র পাশে দাঁড়িয়ে ভারতকে বার্তা ব্রিটেনের]
এই প্রথম নয়, এর আগেও সীমান্ত নিয়ে সংঘাতে জড়ায় পাক সেনা ও আফগান তালিবান। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দু’টি পৃথক ঘটনায় পাক সীমান্ত লাগোয়া আফগানিস্তানের (Afghanistan) নিমরোজ ও নানগরহার প্রদেশে সীমান্ত বরাবর বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করে পাকিস্তানি ফৌজ। কিন্তু সেই ফেন্সিং ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় সেখানে মোতায়েন তালিবান সীমান্তরক্ষীরা। শুধু তাই নয়, বাধা দিলে পাক ফৌজিদের গুলি করারও হুমকি দেয় তারা।
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করেছে পাকিস্তান (Pakistan)। আর অতীতকাল থেকেই সেই সীমান্ত নিয়ে সংঘাত চলছে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে। ১৯৪৭ সাল থেকে কোনও আফগান সরকার ডুরান্ড লাইনকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাক নীতিনির্ধারকরা মনে করছিলেন তালিবান ক্ষমতায় এলে তারা সেই স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল জেহাদিরা।