প্রণব সরকার, আগরতলা: নৈশ কারফিউ অমান্য করে মধ্যরাত পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান করায় ত্রিপুরায় বন্ধ করে দেওয়া হল দু’টি বিয়েবাড়ি। এর মধ্যে ‘মাণিক্য কোর্ট’ নামে একটি বিয়ে বাড়ির মালিক রাজপরিবারের সদস্য মহারাজ প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন।
[আরও পড়ুন: ‘উত্তরপ্রদেশ এখন করোনা প্রদেশ’, যোগীর বিরুদ্ধে তথ্য লুকনোর অভিযোগ অখিলেশের]
সোমবার রাত ১২টা নাগাদ রাজধানী আগরতলার প্রাণকেন্দ্রে বিয়ে বাড়িতে অভিযান চালান জেলাশাসক শৈলেশ যাদব স্বয়ং। তার সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। তখনও বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। করোনা পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নৈশ কারফিউ জারি রয়েছে। অভিযানে গিয়ে জেলা শাসক শৈলেশ কুমার যাদব পুরোহিত-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। ছিঁড়ে ফেলেন বিয়ের অনুমোদন পত্র। বিয়ের অনুমোদনে ৫০ জনকে নিয়ে রাত ১০টার আগে বিয়ে শেষ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই আদেশই মানা হয়নি। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে যান জেলা শাসক শৈলেশ কুমার যাদব। মারধরও করা হয় কয়েকজনকে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর এক বছরের জন্য দু’টি বিয়ে বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়।
এই ঘটনা ঘিরে শহরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সমালোচনার মুখে পড়েছেন জেলাশাসক। ত্রিপুরায় এমনিতেই করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এড়াতে নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া রাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এহেন অবস্থায় নৈশ কারফিউ চলাকালীন মধ্যরাত পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ শঙ্কর রায় জেলাশাসকের পদক্ষেপকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন। যদিও জেলাশাসকের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ করছেন নেটিজেনরা। সামাজিক মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়। জানা গিয়েছে, জেলাশাসকের অভিযানের আগেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। লগ্নভ্রষ্টা হননি কন্যা। জেলা শাসক শৈলেশ কুমার যাদব জানিয়েছেন, জেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। বার বার আবেদন করা সত্বেও নৈশ কারফিউ ভেঙে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছিল বিয়ের পার্টি। কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া উপায় ছিল না। এছাড়া, পুলিশের ভূমিকায় প্রকাশ্যে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন জেলাশাসক। পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বিয়ে বাড়িতে মানা হয়নি করোনা বিধি। ছিল না মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব। ছিল না স্যানিটাইজেশনের কোনও ব্যবস্থা।