সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলামের অবমাননার অভিযোগে দুই মুক্তমনাকে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে মানবাধিরাক সংগঠনগুলি। তবে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনাতেও অনড় তেহরান। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ১৯৪ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে দেশটিতে।
সিএনএন সূত্রে খবর, সোমবার ইউসুফ মেহেরদাদ ও সাদরুল্লা ফাজেলি জারাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ইসলাম বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে ২০২০ সালের মে মাসে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। শুনানি শেষে ২০২১ সালে ওই দুই ব্যক্তিকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, বিচারের নামে প্রহসন করেছে ইরানের প্রশাসন। গ্রেপ্তার করার পর মেহেরদাদ ও সাদরুল্লাকে পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি। আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের দেওয়া তথ্য মতে, ইউসুফ মেহেরদাদ ও সাদরুল্লা ফাজেলি জারা ‘অন্ধবিশ্বাসের সমালোচক’ বলে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের সদস্য ছিলেন। হলা হচ্ছে, মুক্তমনা হওয়ার খেসারত প্রাণ দিয়ে দিতে হয়েছে তাঁদের।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ফারাজোল্লাহ ছাব ওরফে হাবিব আসায়ুদ নামের এক ইরানি ও সুইডিশ নাগরিককে ফাঁসিতে ঝোলায় তেহরান। প্রশাসনের দাবি, তিনি নাকি আরবের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন অই আহওয়াজের নেতা ছিলেন। যারা ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চালায়। ২০১৮ সালে ইরানের তৈল সম্পদে ভরপুর খুজেস্তানে হামলা চালায় লিবারেশন অব আহওয়াজ। নিশানায় ছিল ইরানের সেনাবাহিনী। প্রাণ যায় অন্তত ২৫ জনের। সেই অপরাধেই ৫ বছর পর হাবিব আসায়ুদকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ইরান।
[আরও পড়ুন: সেনা-আধাসেনার লড়াইয়ে রক্তাক্ত সুদান, আলোচনাতেও থামছে না সংঘর্ষ]
প্রসঙ্গত, হিজাব বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই ইরানে (Iran) ফাঁসির সংখ্যা বাড়ছে। গত জানুয়ারি মাসে ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ ও ‘পৃথিবীর বুকে দুর্নীতি’-র অপরাধে দুই কিশোরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ইরান। হিজাব না পরার কারণে পুলিশি মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নামেন ইরানের সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদে সরব হন সেদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। কিন্তু প্রতিবাদীদের থামাতে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে খোমেইনির প্রশাসন।