শাঁখা-পলা একজন মহিলার বৈবাহিক জীবনের চিহ্ন। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে শাঁখার ব্যবহার শুরু হয়। সেই সময়ে শঙ্খাসুর নামে এক অসুরের তাণ্ডবে ত্রিভুবন অতিষ্ট হয়ে ওঠে। স্বর্গের দেবতারা তখন শরণাপন্ন হন বিষ্ণুর। বিষ্ণুদেব তখন এই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন। এর পর তার ধর্মপরায়ণ স্ত্রী তুলসী নারায়ণের কাছে স্বামীকে ফেরত পাওয়ার জন্য ধ্যান শুরু করেন। তুলসীর প্রার্থনায় নারায়ণ সাড়া দিলেও শঙ্খাসুরকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। তখন নারায়ণ শঙ্খাসুরের প্রতীক হিসাবে তারই হাড় দিয়ে এই শাঁখা তৈরি করেন এবং তুলসীকে দেন। সেই থেকেই বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনায় এটি পরা শুরু করেন। সেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া আজকের বিয়ের আসরেও।
তবে শাঁখা-পলা এখন শুধুই বিয়ের চিহ্ন নয়। মেয়েদের ফ্যাশনে নতুন স্টেটমেন্টও বটে!
ফ্যাশন! শাঁখা-পলা এয়োস্ত্রীর চিহ্ন। তা কি আবার ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠতে পারে? কেন নয়! আলবাত হবে। সোনা দিয়ে বাঁধানো শাঁখা পরেন অনেকে। পলাতেও এই ধরনের ডিজাইনের চল এখন। কারুকাজ করা মোটা শাঁখা-পলাই এখন বেশি ট্রেন্ডিং। আগে ছিল সরু শাঁখার চল, এখন মোটা শাঁখাই ফ্যাশন। শাঁখা অন্তত ইঞ্চিখানেক মোটা হলে মন্দ হয় না। সঙ্গে মানানসই চওড়া পলা। এই ধরনের শাঁখা পরার রেওয়াজই এখন বেশি। পলা ছাড়াও শাঁখা পরতে পারেন স্রেফ কয়েকগোছা সরু চুড়ি দিয়ে। কিংবা শুধু শাঁখা পরেই একেবারে অনন্য হয়ে উঠতে পারেন।
এ ছাড়া সালোয়ার-কুর্তার সঙ্গে পরতে পারেন জোড়া শাঁখা-পলা। তা-ও আবার এক হাতে! হঠাৎ দেখে মনে হবে, শাঁখা-পলা নয়। স্রেফ সাদা-লাল চুড়ি! দিব্য লাগবে কিন্তু। শাঁখা-পলা পরাও হল আবার ফ্যাশন বজায় থাকল। ক্ষতি কী! অনেকে শাঁখা-পলা বাঁধানো পরতে পছন্দকরেন। সোনার তুলনায় দামও কিন্তু খুব একটা বেশি নয়, আর বিয়ের স্টাইল-স্টেটমেন্টেও তা বেশ নয়া সংযোজনই হবে।
(প্রতিবেদনটি 'ছাঁদনাতলা' ফিচারের অংশ।)