সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টুইন টাওয়ার হামলার পর থেকেই নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক আমেরিকা (America)। একাধিকবার নিজের নাগরিকদের ব্যক্তগত পরিসরে উঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির উপর। এবার প্রকাশ্যে আরও বড় চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল-সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতাদের উপর নজরদারি চালিয়েছে আমেরিকা।
[আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম হদিশ মেলা করোনার প্রজাতিকে কী নামে ডাকা হবে? জানিয়ে দিল WHO]
রবিবার ডেনমার্কের সংবাদমাধ্যম ‘ডেনমার্ক রেডিও’ (DR)-এর তরফে দাবি করা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ব্রিটেন, সুইডেন, নরওয়ে, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশের শীর্ষ রাজনীতিকদের উপর নজরদারি চালায় মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (NSA)। আর এই কাজে মার্কিন গোয়েন্দাদের মদত দেয় ডেনমার্কের গোয়েন্দা সংস্থা। মিলিতভাবে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল, দেশটির প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার ও প্রাক্তন বিরোধী নেতা পিয়ার স্টেইনব্রুকের উপর নজরদারি চালায় NSA। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশের নেতাদের ফোনে আড়ি পাতা হয় বলে খবর। এ ভাবে পাওয়া বিপুল পরিমাণ তথ্য জড়ো করে রাখতে ডেনমার্কের আমেজর দ্বীপে ডেনমার্কের গুপ্তচর সংস্থার দপ্তরে একটি তথ্যকেন্দ্রও গড়ে তোলা হয়েছিল বলে দাবি ওই রিপোর্টের। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে হওয়া এই তথাকথিত চরবৃত্তির ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। ডেনমার্ক এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে ফ্রান্স-সহ ইইউ-ভুক্ত একাধিক দেশ। তাদের বক্তব্য, রিপোর্ট সত্যি প্রমাণিত হলে, যা করা হয়েছে তা ‘গুরুতর অপরাধ’। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, ডেনমার্কের সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০১৫ সালে চরবৃত্তির ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালায় ডেনমার্কের ‘ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস’। আর তখনই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, NSA’র তৈরি ‘Xkeyscore’ নামের একটি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে ইউরোপের নেতাদের ফোন, টেক্সট মেসেজ সমস্ত কিছু রেকর্ড করা হত। এর জন্য ডেনমার্কের ‘সাবমেরিন ইন্টারনেট কেব্ল’ পরিষেবা ব্যবহার করছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো চাপে পড়েছে ডেনমার্ক। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ট্রাইন ব্রামসেন দাবি করেছেন যে চরবৃত্তির এহেন কাজ তারা সমর্থন করে না। পড়শি দেশের নেতাদের উপর নজরদারি চালানোর মতো ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।