শঙ্করকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার জের! দুষ্কৃতীদের হামলায় মৃত্যু হল এক বিজেপি কর্মীর। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের সুরুন (১) পঞ্চায়েতের ইন্দ্রান গ্রামের ঘটনায় বিজেপির অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। মৃতের পরিবারের তরফে রায়গঞ্জ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিজেপি সূত্রে খবর, বাংলা নববর্ষের সন্ধেয় বিজেপির পতাকা লাগাচ্ছিলেন বিশু দাস(৫৪)। সেইসময় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছিলেন তিনি। আচমকাই একদল দুষ্কৃতী তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। তারপর তাঁকে ঘরে বন্ধ করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পরে ওই ব্যক্তির চিৎকার শুনে আকালী দাস নামে এক মহিলা ছুটে আসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শেষপর্যন্ত রবিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মাথা-সহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মাথায় ভারী বস্তুর আঘাতেই ওই বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীরা এলাকায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
[আরও পড়ুন : মাঝ রাস্তায় টাকা লুট করে চম্পট অ্যাম্বুল্যান্স চালকের, মৃত দাদাকে নিয়ে রাস্তায় পড়ে বোন]
এই ঘটনায় সুরুন(১) গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য জিতু দাস বলেন, “জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ায় কাউকে হত্যা করা হলে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। এটা মানা যায় না।” মৃতের ছেলে জিৎ দাসের অভিযোগ, “জয় শ্রীরাম বলায় বাবাকে খুন করা হয়েছে। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।” মৃতের দাদা সুনীল দাসও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী অমিত কুণ্ডু বলেন, “আমাদের দলের সক্রিয় কর্মীর উপর পাশবিক অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার না হলে রবিবার জাতীয় সড়ক অবরোধেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের অভিযোগ, “দিন দুয়েক আগে তৃণমূলের প্রার্থী মোশারফ হোসেন ওই এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের উৎসাহ দিয়েছিল। জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিলে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। তারপরই এই ঘটনা।”
তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রায়গঞ্জের প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। অন্য কোনও কারণে ওই ব্যক্তি খুন হতে পারে বলে পুলিশ মারফত জানতে পেরেছি। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” ইটাহারের তৃণমূলের প্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। অন্য কোনও কারণে খুন হয়েছে। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে আসল সত্য সামনে আসবে।” এলাকায় মোতায়ন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে না। তদন্ত চলছে।”