সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রেল শহর আদ্রার মন পেতে কাশীপুরে এলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী (Rail Minister) পীযূষ গোয়েল (Piyush Goyal)। কিন্তু BJP তাঁকে নিয়ে এসে নির্বাচনী জনসভা করালেও শেষপর্যন্ত মাঠ ভরাতে পারল না। অথচ রবিবার মাঠ ছোট করে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। পুরুলিয়ার (Purulia) কাশীপুরে সেবাব্রতী সঙ্ঘের যে মাঠে এদিন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সভা করলেন, সেই মাঠেই আগামী মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee) সভা করবেন।
এদিন রেলমন্ত্রী জনসভার মধ্যেই ওই মাঠের সমগ্র অংশ জুড়ে তৃণমূলনেত্রীর সভার জন্য মাঠ প্রস্তুত করার কাজও চলে। আর সভার শুধু পেছনের অংশ নয় মাঝখানেও একাধিক চেয়ার ফাঁকা ছিল। অথচ সভায় উপস্থিত ছিলেন কাশীপুর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী কমলাকান্ত হাঁসদা, বিজেপির রাজ্যের সাধারন সম্পাদক তথা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। যা নিয়ে অস্বস্তি আরও বেড়েছে কাশীপুর বিধানসভার বিজেপি নেতৃত্বের।
[আরও পড়ুন: ‘নিজেদের ভবিষ্যৎ বরবাদ করবেন না’, নতুন ভোটারদের কাছে টানার বার্তা মোদির]
এদিন রেলমন্ত্রীর সভার সময় দুপুর একটা থাকলেও শুরু হতে আড়াইটে বেজে যায়। তবে মাঠ ভরতি না হলেও এদিনের সভাস্থল থেকে রেলমন্ত্রী নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন। পিসি-ভাইপোর কথা বলে পরিবারতন্ত্র সামনে এনে কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়াকেও আক্রমন করেন রেলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “পিসি-ভাইপোর পরিবারতন্ত্রের সঙ্গে কাশীপুরে বাবা-ছেলে-মেয়ের অত্যাচারের শাসন চলছে। থানার মধ্যেও ঢুকে মারপিট করছে। এবার সময় এসেছে বদল করার।” রাজ্যে সিন্ডিকেট-কাটমানির সরকার চলছে বলে শাসক দলকে আক্রমন করেন রেলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিকাশের জন্য বাধা হয়ে যাচ্ছে। ডবল ইঞ্জিন সরকার দরকার। এই সিন্ডিকেট-কাটমানির সরকারকে মুখের ওপর জবাব দিতে হবে। ইমানদার সরকারকে নিয়ে আসুন।” এদিন সরাসরি তৃণমূলনেত্রীকেও আক্রমন করে রেলমন্ত্রী। বলেন, “জয় শ্রীরাম বললে দিদি রেগে যাচ্ছেন। জয়শ্রীরাম বলা কি অপরাধ?”
কাশীপুরের বিধায়ককে নিয়ে রেলমন্ত্রীর পরিবারতন্ত্রের অভিযোগের পালটা অবশ্য দিয়েছে তৃণমূল। বিধায়ক তথা কাশীপুরের তৃণমূল প্রার্থী স্বপন বেলথরিয়া বলেন, “ছেলে-মেয়ে কি রাজনীতিতে আসতে পারবে না? বিজেপিতে কি একই পরিবারের একাধিক সদস্য নেই? আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেছিলেন যদি নিয়ম করতে হয় তাহলে এই নিয়ম চালু হোক। আমরা যারা একই পরিবার থেকে একাধিক জন রাজনীতি করছি তারা পদত্যাগ করব। কিন্তু বিজেপিকেও তাই করতে হবে।” ফলে রেলমন্ত্রী এদিন সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে বলেন, “সারা বিশ্ব জানে পঞ্চকোট রাজপরিবারের কথা। এই কাশীপুর পঞ্চকোট রাজবংশের রাজধানী ছিল। কিন্তু এই রাজধানীতে কোন উন্নয়ন হয়নি।”