গৌতম ব্রহ্ম: রাজ্যে করোনার (Coronavirus) গ্রাফ বেশ ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ছে সংক্রমণ। এদিকে, বঙ্গে হাজির বর্ষা। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টির ঝিরিঝিরি ধারায় ভিজছে রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক নবান্ন। শুক্রবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। এদিনের বৈঠকে নেওয়া হয় একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। মশাবাহিত রোগ রুখতে রাজ্যজুড়ে জারি নানা নির্দেশিকাও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষায় জমা জল নেমে যাওয়ার পর রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত বোতল, ডাবের খোলা, নালায় জমা জলে মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। ডিম পাড়ছে ডেঙ্গুর (Dengue) জীবাণুবাহক এডিস ইজিপ্টাই আর ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহক অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই মশা। একেই করোনার সংক্রমণ। তার উপর রাজ্যজুড়ে ভাইরাল জ্বর হানা দিয়েছে। তার মধ্যে মশাবাহিত রোগ বাড়লে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।
[আরও পড়ুন: দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোটদানের আরজিতে তৃণমূল সাংসদদের চিঠি শুভেন্দুর, বয়ান নিয়ে আপত্তি সৌগতর]
তাই শুক্রবারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে একগুচ্ছ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,
বৃষ্টির জেরে কোথাও জল জমছে কিনা, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
- যদি জল জমে থাকে তবে তা অবিলম্বে সরানোর বন্দোবস্ত করতে হবে।
- মশা (Mosquito) যাতে জন্মাতে না পারে সেক্ষেত্রে পথেঘাটে ব্লিচিং পাউডার-সহ অন্যান্য মশানাশক রাসায়নিক ছড়ানোর বন্দোবস্ত করতে হবে।
- মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ – এই দুই জেলা থেকে ডেঙ্গু সংক্রমণের খবর বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাই ওই দুই জেলাকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
- জেলার যে সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার কথা শোনা যাচ্ছে সেখানে নিয়মিত গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে জেলাশাসকদের।
- সেচ দপ্তরের যে নালা রয়েছে, সেখানে যাতে জলপ্রবাহে অসুবিধা না হয়, জল জমে না থাকে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
- নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
- সাধারণ মানুষের সতর্কতা বাড়াতে পুরকর্মীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া নিয়ে প্রচার করতে হবে।
- করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ফের ক্লাসরুমে ফিরেছে পড়ুয়ারা। তাই স্কুলে যাতে কোনওরকম জল জমতে না পারে, সেদিকে শিক্ষাদপ্তর বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, দু’দিনের বেশি জ্বর থাকলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার (Malaria) মতো পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। হাসপাতালে ভরতি থাকা ডেঙ্গুর উপসর্গযুক্ত কোনও রোগীর মৃত্যু হলে, তাঁর কো মর্বিডিটি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লেখার সময় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শারীরিক সমস্যার কথা উল্লেখ করতে হবে।