সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লখনউয়ে ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভারত (India) ১-১ করে ফেললে কী হবে, লখনউয়ের একনা স্টেডিয়ামের পিচ নিয়ে এখনও পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। লখনউয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে ৯৯ রানের বেশি করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ভারত যে রান তুলতে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যায়। জেতে একেবারে ম্যাচের শেষ বলে। যার পর টি-টোয়েন্টিতে ভারত অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া (Hardik Pandya) একহাত নিয়ে যান একনা পিচকে। বলে যান, একনার যা পিচ, স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো।
পরিণতি হিসেবে লখনউয়ের কিউরেটরের চাকরি চলে যায়। কিন্তু আমেদাবাদে সিরিজ নির্ধারক টি-টোয়েন্টি খেলার আগে পিচ-বিতর্ক ধাপাচাপা দিতে নেমে পড়ল ভারত। ভারতের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব বলে দিলেন, ‘‘খেলা শেষে আমার আর হার্দিকের মধ্যে লম্বা কথা হয়েছে। আমরা দু’জনেই সেখানে ঠিক করি যে, ভবিষ্যতে যে রকম পিচ আমাদের দেওয়া হবে, আমরা সেখানেই খেলব। যা-ই পিচ দেওয়া হোক আমাদের, কোনও অসুবিধে নেই। আমরা তৈরি।’’
[আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের কিংবদন্তি ফুটবলার পরিমল দে প্রয়াত, ‘জংলা’র প্রয়াণে শোকের ছায়া ময়দানে]
আজ মোতেরায় ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজ নির্ণায়ক টি-টোয়েন্টি। যে ম্যাচ জিতবে, সিরিজ তার। তার আগে এ দিন সূর্যকুমার বলে দেন, ‘‘কোন পিচে খেলছি, কোন মাঠে খেলছি, সে সব নিয়ে ভাবার কোনও মানে হয় না। আসলে যে সমস্ত জিনিস আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না, তা নিয়ে ভেবে আর লাভ কী? আমাদের হাতে ছিল ম্যাচ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলে ম্যাচ জেতা। আমরা সেটা করেছি।’’
তা করেছেন সূর্যরা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১০০ রান তাড়া করতে গিয়ে ৮৩-৭ হয়ে গিয়েছিল ভারত। শেষ দু’ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। ক্রিজে তখন অধিনায়ক হার্দিকের সঙ্গে ছিলেন সূর্য। শেষ পর্যন্ত শেষ বলে গিয়ে ম্যাচ জেতে ভারত। হার্দিকের সঙ্গে নিজের পার্টনারশিপ নিয়ে সূর্য বলেছেন, ‘‘হার্দিকের সঙ্গে এই প্রথম আমি ব্যাট করলাম না। অতীতেও আমাদের মধে্য দারুণ সব পার্টনারশিপ হয়েছে। আসলে সময় সময় নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা হওয়াটা খুব জরুরি। আবহকে ফুরফুরে রাখা জরুরি। আমরা বুঝতেই পারছিলাম, শেষের ওভারটা খুব টেনশনের হতে চলেছে। আমরা নিজেদের শান্ত রাখতে হাসাহাসি করছিলাম, একে অন্যের উপর বিশ্বাস রাখছিলাম। ঠিক করেছিলাম, সুযোগ যে-ই পাবে, সে-ই ম্যাচ জেতাবে।’’
কিন্তু তিনি সূর্য– মহাচাপের পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখেন কী ভাবে? বিশ্বের শ্রেষ্ঠ টি-টোয়েন্টি ব্যাটার বলে দিলেন, নিজেকে শান্ত রাখার নেপথ্যে ঘরোয়া ক্রিকেট। বলছিলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার আগে প্রচুর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি আমি। সেই অভিজ্ঞতা খুব কাজে দিচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জিং পিচে খেলতে হয়। বাদবাকি আমি শিখেছি, সিনিয়রদের দেখে।’’ অনেকেই মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন চার টেস্টের সিরিজে অভিষেক হবে সূর্যর। মুম্বইকর আসন্ন টেস্ট সিরিজ নিয়ে উত্তেজিত ঠিকই। কিন্তু মন তিনি বর্তমানে রাখতে চান। বলছিলেন, ‘‘আমরা সবাই জানি সিরিজটা কতটা উত্তেজনাপূর্ণ হতে চলেছে। দেখুন, টেস্ট খেলার স্বপ্ন কার না থাকে? আমারও আছে। কিন্তু একই সঙ্গে বর্তমানে মনটাও রাখা দরকার। তাই আপাতত আমি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিয়ে ভাবছি, তার পর না হয় অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ নিয়ে ভাবব।’’
(ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড- তৃতীয় টি-টোয়েন্টি, আমেদাবাদ
সন্ধে ৭.০০, স্টার স্পোর্টস)