সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর মাত্র ১১ দিন। তারপরই ৩ বছর পূর্ণ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। কিন্তু এই সংঘাত থামাতে এখনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি। সমান তালে লড়াই করে যাচ্ছে যুযুধান দুপক্ষ। তবে মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি। কিন্তু তাঁর শর্ত দিল, এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে হবে আমেরিকাকে। এর ঠিক একদিনের মাথায় বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোন করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। পাশাপাশি তিনি ফোনে কথা বলেছেন জেলেনস্কির সঙ্গেও। তাহলে কী এবার যুদ্ধ থামানোর কোনও পথ বের করলেন ট্রাম্প?
শান্তির পথে ফিরতে একের পর শর্ত আরোপ করে চলেছে কিয়েভ-মস্কো। রাশিয়ার কার্স্কে ঢুকে ব্যাপক আক্রমণ শানাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনা। কিন্তু জানা গিয়েছে, যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট হয়ে ওঠা কার্স্ক রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে রাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এনিয়ে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মঙ্গলবার তিনি জানান, “আমি জানি না, আমরা দেখব। আমাদের কাছে সব অঞ্চলই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনও অগ্রাধিকার নেই। আমরা রাশিয়াকে কার্স্ক দিয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমার কিছু শর্ত রয়েছে। আমাদের যে জায়গাগুলো রাশিয়া দখল করে রেখেছে সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে পুতিনকে। পাশাপাশি দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এরপরই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তাঁর কথা হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে। প্রথমে আমেরিকার আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি কথা বলেন পুতিনের সঙ্গে। ট্রাম্পকে মস্কোয় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান পুতিনও। ক্রেমলিন পরে সরকারিভাবে দুজনের কথোপকথনের কথা জানায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা হয় তাঁদের মধ্যে। এরপরই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলতে জেলেনস্কিকে ফোন করেন ট্রাম্প। এই কথোপকথন নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট লেখেন, 'শান্তির পথে ফেরার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।' এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হতে আগ্রহী পুতিন আর জেলেনস্কি। তাঁরা বৈঠকে বসতে রাজি।
প্রসঙ্গত, গত বছর নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। অনেকবারই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ক্ষমতায় এলে নাকি একদিনের মধ্যে দুদেশের লড়াই থামিয়ে দেবেন। তিনি সহজে যুদ্ধের ময়দানে একচুল জমিও ছাড়তে নারাজ রাশিয়া ও ইউক্রেন। ফলে রাজি থাকলেও পুতিন ও জেলেনস্কিকে সত্যিই ট্রাম্প মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারেন কি না সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।
