সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি বছরের ১১ মার্চ পাকিস্তান সরকারের রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল বালোচ বিদ্রোহীরা। ৪৫০ জন যাত্রী-সহ জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ, ২৮ পাক সেনা ও ২৬ পণবন্দির মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে দেয় 'বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি' বা বিএলএ-কে। বড়সড় সেই অভিযানের নেপথ্যের গল্প এবার সামনে আনল বিএলএ। কীভাবে চলে এই অপারেশন? বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনার বিস্তারিত ভিডিও এদিন প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিও'র পরতে পরতে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে বালোচিস্তানের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে পাঞ্জাব প্রদেশ নির্ভর পাকিস্তান।
বিএলএ-এর তরফে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ মিশনের নাম দেওয়া হয়েছিল 'অপারেশন দরশা এ বোলান ২.০'। যেহেতু বালোচিস্তানের বোলান এলাকায় এই অভিযান চালানো হয় তাই এই নামকরণ। ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে বিদ্রোহীরা সুপরিকল্পিতভাবে এই অভিযান চালায়। তাদের ট্রেনিং, কীভাবে ট্রেনটি থামাতে হবে, পণবন্দিদের এক জায়গায় আনতে হবে, সর্বোপরি পাক সেনা হেলিকপ্টার নিয়ে হামলার চেষ্টা করলে কীভাবে তা রুখে দিতে হবে সবটা তুলে ধরা হয়েছে ভিডিওতে। ৩০ মিনিটের এই ভিডিওতে ট্রেন অপহরণের পর ভিতরের নাটকীয় ফুটেজও তুলে ধরা হয়েছে। বিএলএ-র একাধিক ব্রিগেড এই অভিযানে অংশ নেয়। এই তালিকায় ছিল মজিদ ব্রিগেড, ফতেহ স্কোয়াড ও অন্যান্য একাধিক স্কোয়াড।
ভিডিওতে বালোচদের প্রতি পাকিস্তানের সরকারের নির্যাতনের বিস্তারিত তথ্য ও ফুটেজ তুলে ধরেছে বিদ্রোহীরা। একজন বালোচ নেতাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "আমাদের লড়াই এবার যুদ্ধের পথে মোড় নিয়েছে। আমাদের যুবকরা এই পথে হাঁটতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ওদের কাছে এ ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।" পাশাপাশি আরও এক বালোচ নেতা বলেন, "বন্দুককে রুখতে বন্দুকেরই প্রয়োজন হয়। বালোচ সংগ্রামীরা নিজের জীবনের পরোয়া না করে এই হামলার জন্য সম্পূর্ণরূপে তৈরি। আজ এক সন্তান তার পিতাকে এবং পিতা তার সন্তানকে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে সগর্বে বিদায় দিয়েছে।"
পাশাপাশি ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কীভাবে পাকিস্তান বালোচদের সর্বস্ব লুঠ করে রাওয়ালপিণ্ডি ও পাঞ্জাব প্রদেশের স্বার্থসিদ্ধি করছে। বালোচিস্তানে চলা নরসংহার নিয়ে রাষ্ট্রসংঘ মুখে কুলুপ এঁটে থাকায় সেখানকার মানবাধিকার সংগঠনেরও সমালোচনা করেন বিদ্রোহীরা। জাফর এক্সপ্রেস অপারেশনে যে বিদ্রোহীদের মৃত্যু হয়েছে তাদের শহিদ আখ্যা দিয়ে তাদের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, স্বাধীন বালোচিস্তান গঠন না করা পর্যন্ত এই লড়াই জারি থাকবে।