সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২২ সালের পর এই প্রথমবার। আমেরিকার চাপে ইউক্রেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে রাজি রাশিয়া! দুদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ইঙ্গিত দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহেই নাকি চুক্তি হতে পারে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। এবার শান্তির পথে ফিরতে সরকারি কিয়েভের সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানাল মস্কো। তাহলে দীর্ঘ সংঘাতের পর এবার কি ছেদ পড়তে চলেছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে? আমেরিকার চাপে ইউক্রেনের সামনে মাথা নত করছেন পুতিন? উঠছে নানা প্রশ্ন।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। এমনকী যুদ্ধ শুরু করা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দুষতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর জেলেনস্কির সঙ্গে কখনও নিজে ফোনে কথা কিংবা প্রতিনিধি পাঠিয়ে শান্তি চুক্তির জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। যুযুধান দু'পক্ষের উপরই চাপ বাড়াচ্ছেন তিনি।
রয়টার্স সূত্রে খবর, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ জানিয়েছেন, "প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি চুক্তির জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। আমরা আশা করছি, কিয়েভও একই পথে হাঁটবে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত না হানার বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বসতে আমরা রাজি।" তবে রাশিয়ার এই বিবৃতিতে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি ইউক্রেন। ফলে তিন বছর পর ফের এই দু'দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় কিনা সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের।
প্রসঙ্গত, জেলেনস্কির আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। তিনিই ছিলেন ক্রেমলিনের ‘চোখের মনি’। তাঁর শাসনকালে দু'দেশের সম্পর্ক এতটা তিক্ত ছিল না। চলত দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধও। এই প্রাক্তন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টকেই ফের কিয়েভের মসনদে বসাতে চেয়েছিল মস্কো। কিন্তু ক্ষমতায় আসেন জেলেনস্কি। তিনি ইউরোপীয় বিশ্বের সঙ্গে সখ্য বাড়াতেই রাশিয়া-ইউক্রেনের সম্পর্ক একেবারে খাদে পড়ে যায়। তারপর ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই সময় যুদ্ধের সপ্তম দিনে প্ল্যান বি হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচকে ইউক্রেনের মসনদে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। সমর বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা ছিল, জেলেনস্কি সরকারকে উৎখাত করে ফের নিজেদের বিশ্বস্ত পাত্র ইয়ানুকোভিচকে বসিয়ে এই যুদ্ধে ইতি টানতে চান পুতিন। কিন্তু তাঁর পরিকল্পনা সফল হয়নি। উলটে আমেরিকার অস্ত্রবলে রুশ ফৌজকে রণক্ষেত্রে পালটা মার দিতে শুরু করে কিয়েভ।
