সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তীব্র জল সংকট। এক মুঠো খাবারের জন্য হাহাকার। ত্রাণের গাড়ি দেখলেই ঘটিবাটি হাতে ছুটে আসছে শয়ে শয়েম মানুষ। নিষ্পাপ শিশুরাও ক্ষুধার্ত চোখে সেই ভিড়ে শামিল। গত আড়াই বছর যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজার এই ছবিই দেখছে গোটা বিশ্ব। বহু আলোচনা, মধ্যস্থতা, অনুরোধের পরেও লড়াই থামার নাম নেই। কিন্তু এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। পেটের জ্বালায় খাবার চুরি করতে গিয়ে হামাসের হাতে মৃত্যু হল ৬ জনের! এমনকী আরও ১৩ জনকে পায়ে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে তারা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। যার বদলা নিতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহুদি দেশটি। তারপর থেকেই জারি লড়াই, মৃত্যুমিছিল। গাজাজুড়ে তীব্র হয়েছে খাদ্যের হাহাকার। বিভিন্ন গুদাম, 'কমিউনিটি কিচেনে' মজুত করে রাখা হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। হামাস পরিচালিত সরকারের তরফে আগেই প্যালেস্তিনীয়দের জন্য সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই খাবার লুটম করেছিলেন কয়েকজন। আর তারই শাস্তি দিয়েছে হামাস। পেটে খিদে নিয়েই জেহাদিদের হাতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
এনিয়েম হামাস পরিচালিত সরকারের মিডিয়া অফিসের ডিরেক্টর ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলে, "গত সপ্তাহেই বেশ কয়েকটি খাবারের গুদামে চুরির ঘটনা ঘটেছে। তারপরই আমরা নির্দেশিকা জারি করেছিলাম। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে এই নির্দেশিকা লঙ্ঘন করবে সে ফল ভুগবে।" রয়টার্সের এক প্রতিবেদন মোতাবেক, হামাস সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে এবং অপরাধীদের ধরতে রাত ৯টা (স্থানীয় সময়) থেকে কারফিউ জারি করেছে। যা নিয়ে আতঙ্কিত গাজাবাসি।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ইজরায়েল তরফে হামাসকেসর্বশেষ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৪৫ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে পণবন্দিদের মুক্তির। একইসঙ্গে হামাসকে অস্ত্রত্যাগ করতে হবে। যদিও সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে হামাস। তাদের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু চান নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে। এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে নিজেদের পণবন্দিদের ফেরত নেওয়া এবং ভয়ংকর অনাহারের মাঝে গাজায় ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাওয়ার। ফলে এই যুদ্ধ কবে থামবে তার এখনও সুরাহা মিলল না।
