সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুসপ্তাহ ধরে দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলস। জ্বলে গিয়েছে হাজার হাজার বাড়ি। প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন। আশঙ্কা ছিল পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও বাড়বে। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই লস অ্যাঞ্জেলসের উত্তর প্রান্তের পাহাড় নতুন করে দাবানলে জ্বলছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত ৮ হাজার একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই আগুন। কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ। ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে সান্টা মনিকা ও মালিবুর মধ্যবর্তী অন্তত ১২৬২ একর জমি দাবানলে জ্বলতে শুরু করে। শুকনো আবহাওয়ায় প্রবল হাওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে অন্তত ১২ হাজার বাড়ি। আমজনতার পাশাপাশি গৃহহীন হলিউড তারকারাও। ১ লক্ষেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার নানা এলাকা থেকে। এখনও নিখোঁজ বহু। জরুরি অবস্থা জারি করে চলছে আগুন নেভানোর চেষ্টা। কিন্তু আগুন নেভাতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন দমকলকর্মীরাও। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল মিলছে না। যে গতিতে আগুন ছড়াচ্ছে, তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে যত জলের দরকার, সেটার যোগান পাচ্ছেন না দমকলকর্মীরা। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
এর মাঝেই লস অ্যাঞ্জেলসের অন্য অংশও স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। সান্তা ক্লারিটা শহরেই কাছেই দাবানলের উৎপত্তি। আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন দমকলকর্মীরা। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে কাজ চালিয়ে যেতেও সমস্যা পড়তে হচ্ছে তাঁদের। দ্রুত ছড়াচ্ছে আগুন। তাই আকাশপথেও চলছে আগুন নেভানোর কাজ। নতুন এই বিপদে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। গতকাল পাহাড়ে লেলিহান শিখা দেখার পরই বাসিন্দাদের নিরাপদে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। চালু করা হয়েছে জরুরী নম্বরও।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হতে চলেছে এই দাবানল নিয়ন্ত্রণ। ইতিমধ্যে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তা কয়েকশো কোটি ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। দুসপ্তাহখানেক আগেকার দাবানলে ঘরদোর হারিয়েছেন হলিউডের নামী শিল্পীরা। প্যারিস হিলটন, অ্যান্টনি হপকিন্স, মেল গিবসনের মতো তারকাদের চোখে জল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক, রাতদিন এই প্রার্থনা করছেন সকলে। কিন্তু দাবানলের ধ্বংসলীলা অব্যাহতই। নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে উত্তর লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানল।