shono
Advertisement
Operation Sindoor

অপারেশন সিঁদুরে ছারখার ৯ জঙ্গি ঘাঁটি, তালিকায় জেহাদি 'বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে পাক সেনার কেন্দ্র

পরিকল্পনা করেই হামলা হয়েছে জঙ্গিদের আঁতুড়ঘরে।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 04:44 PM May 07, 2025Updated: 09:13 PM May 07, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) অভিযান ভারতীয় সেনার। গুঁড়িয়ে গেল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি। বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, পরিকল্পনা করেই হামলা হয়েছে জঙ্গিদের আঁতুড়ঘরে। কিন্তু কেন এই ৯টি জায়গাকেই বেছে নেওয়া হল হামলা চালানোর জন্য?

Advertisement

১। মারকাজ সুবহান আল্লাহ, বাহওয়ালপুর

২০১৫ সাল থেকে এই মারকাজ ছিল জইশ-ই-মহাম্মদের প্রধান প্রশিক্ষণ ও মতাদর্শ প্রচারের কেন্দ্র। জঙ্গি গোষ্ঠীর সদর দপ্তর হিসাবেও পরিচিত এই মারকাজ। পুলওয়ামা হামলার জঙ্গিরাও এখান থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। কুখ্যাত জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহার এই মারকাজে নিয়মিত যাতায়াত করত। রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঘাঁটি।

২। মারকাজ তইবা, মুরিদকে

লস্কর-ই-তইবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এই মারকাজটি। মুম্বই হামলার অন্যতম জঙ্গি আজমল কাসভ এখান থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তাহাউর রানা, ডেভিড হেডলিরাও এখানে এসেছিলেন। ৮২ একর জমিজুড়ে অবস্থিত এই জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মাদ্রাসা-সহ একাধিক সুযোগসুবিধা রয়েছে। প্রত্যেক বছর বাছাই করা জেহাদিদের নিয়ে কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই মারকাজ তৈরিতে বিরাট অনুদান দিয়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন।

৩। সারজাল তাহরা কালান

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই কেন্দ্রটি জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড হিসাবে বহুল ব্যবহৃত। জইশ-ই-মহাম্মদের ঘাঁটি থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার। সুড়ঙ্গের মাধ্যমে হোক বা পাহাড়ি পথে, অস্ত্র এবং মাদক নিয়ে ভারতে ঢোকে জঙ্গিরা। আইএসআইয়ের সহযোগিতায় এই ঘাঁটি তৈরি হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে এই ঘাঁটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। তার আড়াল থেকে চলত জঙ্গিদের ভারতে পাঠানোর চক্র।

৪। মাহমুনা জোয়া, সিয়ালকোট

হিজবুল মুজাহিদিনের এই ঘাঁটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট এই ঘাঁটিও জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড। জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ও অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় এই ঘাঁটি। ১৯৯৫ সালে জম্মুতে বিস্ফোরণের নেপথ্যও ছিল পাকিস্তানের এই ঘাঁটি। অনুপ্রবেশের প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ভবনের আড়ালে জঙ্গিঘাঁটি গড়ে তুলতে সাহায্য করত এই মাহমুনা।

৫। মারকাজ আহলে হাদিস, বারনালা, ভিম্বার

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই মারকাজটি লস্কর-ই-তইবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। একসঙ্গে অন্তত ১৫০ জন জঙ্গি এই ঘাঁটিতে লুকিয়ে থাকতে পারে। সীমান্ত পেরিয়ে অন্তত ৪৫ জন জঙ্গি এই ঘাঁটি থেকে ভারতে ঢুকতে পারে। মূলত 'স্টেজিং সেন্টার' হিসাবে এই ঘাঁটি ব্যবহার করে লস্কর জঙ্গিরা।

৬। মারকাজ আব্বাস, কোটলি

পাক সেনার ঘাঁটি থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জইশ-ই-মহাম্মদের ঘাঁটি। সীমান্তের খুব কাছে থাকা এই মারকাজের নেতারা জম্মু-কাশ্মীরে নাশকতার ছক করে। এই ঘাঁটিতেও শতাধিক জঙ্গি লুকিয়ে থাকতে পারে। ভারতের পুঞ্চ এবং রাজোরি সেক্টরে অনুপ্রবেশ করা জঙ্গিরা মূলত এই লঞ্চপ্যাড থেকেই ভারতে ঢুকত। এই মারকাজের নেতাদের নাম রয়েছে এনআইএর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায়।

৭। মাসকার রাহিল শহিদ, কোটলি

দুর্গম এলাকায় অবস্থিত হিজবুল মুজাহিদিনের এই ঘাঁটি। পাহাড়ের কোলে এই ঘাঁটিতে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র মজুত থাকত। প্রতিকূল পরিবেশেও আলাদা করে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল এই ঘাঁটিতে। অস্ত্র শিক্ষা, পাহাড় চড়া, সীমান্ত পেরিয়ে বেঁচে থাকার বিশেষ কৌশল শেখানো হত এখানে। ২০০ জঙ্গির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল এই ঘাঁটিতে। হিজবুল মুজাহিদিনের অন্যতম প্রাচীন ঘাঁটি ছিল এটি।

৮। শাওয়াই নাল্লা ক্যাম্প, মুজঃফরাবাদ

লস্কর-ই-তইবার প্রধান ঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম এই ক্যাম্প। মাদ্রাসা-সহ একাধিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত এই ঘাঁটিতে। নবাগতদের স্বাগত জানাতে হাজির থাকত হাফিজ সৈয়দ স্বয়ং। জিপিএস ব্যবহার, মানচিত্র দেখে দিক নির্ণয় শেখানো হত জঙ্গিদের। বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হত এই ঘাঁটিতে। পাক সেনার প্রশিক্ষকরাও এই ঘাঁটিতে তালিম দিত জঙ্গিদের।

৯। মারকাজ সাইয়্যেদনা বিলাল, মুজঃফরাবাদ

পাকিস্তানের বিশেষ এসএসজি বাহিনীর তরফে এই ঘাঁটির জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। জইশ-ই-মহাম্মদের জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশের আগে এই ঘাঁটিতে এসে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিত। একসঙ্গে শতাধিক জঙ্গি এই ঘাঁটিতে থাকতে পারে। ভারত থেকে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিনেতাদের অনেকেও এই ঘাঁটির সঙ্গেই জড়িত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ২০১৫ সাল থেকে এই মারকাজ ছিল জইশ-ই-মহাম্মদের প্রধান প্রশিক্ষণ ও মতাদর্শ প্রচারের কেন্দ্র।
  • হিজবুল মুজাহিদিনের এই ঘাঁটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট এই ঘাঁটিও জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড।
  • অস্ত্র শিক্ষা, পাহাড় চড়া, সীমান্ত পেরিয়ে বেঁচে থাকার বিশেষ কৌশল শেখানো হত এখানে। ২০০ জঙ্গির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল এই ঘাঁটিতে।
Advertisement