সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ টালবাহানার পর পাকিস্তানের সঙ্গে বড়সড় চুক্তি সম্পন্ন করল ভারতবন্ধু রাশিয়া। যার মাধ্যমে আর্থিকভাবে বিরাট লাভবান হতে চলেছে পাকিস্তান। ২.৬ বিলিয়ন ডলারের এই চুক্তির মাধ্যমে করাচিতে তৈরি করা হবে আধুনিক স্টিল প্ল্যান্ট। শুক্রবার মস্কোয় পাকিস্তান দূতাবাসে সাক্ষরিত হল এই চুক্তি।
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২.৬ বিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় এই টাকার অঙ্ক প্রায় ২২ হাজার কোটির একটি চুক্তি হয়েছে রাশিয়া ও পাকিস্তানের। শুক্রবার মস্কোর পাকিস্তান দূতাবাসে এই চুক্তিতে সাক্ষর করেন পাকিস্তানের শিল্প ও উৎপাদন মন্ত্রকের সচিব সইফ আনজুম এবং রাশিয়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এলএলসি-এর মহাপরিচালক ভাদিম ভেলিচকো। পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হারুন আখতার খান এবং রাশিয়ায় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ খালিদ জামালিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে করাচিতে ৭০০ একর জমিতে তৈরি করা হবে অত্যাধুনিক ইস্পাত কারখানা। যার মাধ্যমে পাকিস্তানের ইস্পাত আমদানির পরিমাণ কমে যাবে প্রায় ৩০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের এই চুক্তি অনেক পুরনো। ১৯৭০-এর দশকে সোভিয়েত জমানায় এই প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত এই প্ল্যান্ট রমরমিয়ে চালু থাকে। এরপর দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি ও অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এই কারখানা ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসানের মুখে পড়ে। এই অবস্থায় আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সমস্যার জেরে ২০১৫ সালে এই প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। নতুন করে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে সেই কারখানাই নতুন করে খুলতে চলেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ চায়, নয়া চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া পাকিস্তানকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমস্ত মেশিন পাঠাবে। পাকিস্তানের আশা এই প্ল্যান্টের জেরে তাদের স্টিল আমদানির পরিমাণ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। বর্তমানে ইস্পাতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ৩.১ মিলিয়ন টনের ব্যবধান রয়েছে। নতুন এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে সেই ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান।
তবে ভারত শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধু রাশিয়ার এহেন চুক্তিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই ঘটনা অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি বিষয়। বিশ্ব কূটনীতিতে কেউ কারও শত্রু নয়। তাছাড়া যে স্টিল প্লান্ট গঠনের চুক্তি রাশিয়া করেছে তা পুরনো চুক্তিই পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে। যা অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা। এই ঘটনা ভারত বিরোধী পদক্ষেপ বলে ভাবা একেবারেই ঠিক নয়।
