সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে ভয়ংকর হামলা চালায় হামাস। তারপর থেকে গাজার করুণ পরিণতি দেখছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু সেই হামলার পর নানা মহলেই প্রশ্ন উঠেছিল। কেন সেদিন হামাসের ষড়যন্ত্র ধরতে পারল না মোসাদের মতো ইজরায়েলের তাবড় গোয়েন্দা সংস্থা? আঙুল উঠেছিল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের দিকেও। এবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে বহিষ্কার করা হল শিন বেটের প্রধান রনেন বারকে। যিনি ৩২ বছর ধরে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু হামাসের হামলার পর থেকেই আর তাঁকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না নেতানিয়াহু। তাই রনেনকে ছাঁটাইয়ের পথেই হাঁটলেন তিনি।

১৯৯৩ সালে শিন বেটে যোগ দিয়েছিলেন রনেন বার। ২০২১ সালে তাঁকে নিরাপত্তা সংস্থাটির প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করে ইজরায়েলি সরকার। আগামী বছরই তাঁর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। হামাসের হামলার আগে থেকেই রনেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কে বরফ জমেছিল। নানা কারণে মতবিরোধ ছিল তাঁদের মধ্যে। যা ৭ অক্টোবরের পর একদম তলানিতে ঠেকে। জানা গিয়েছে, গত ৪ মার্চ শিন বেটের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। হামাসের আক্রমণ প্রতিরোধে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে সংস্থাটি। তারপরই শোনা যাচ্ছিল যে, রনেন নিজেই ব্যর্থতার দায়ে নিজের কাঁধে নিয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পদত্যাগ করবেন।
কিন্তু এর আগেই বিবৃতি দিয়ে নেতানিয়াহু জানান, "রনেন বারের উপর আর বিশ্বাস নেই আমাদের। তাই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।" এরপরই আজ শুক্রবার রনেনকে বহিষ্কার করে দেয় ইজরায়েলি সরকার। জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নির্দেশ মেনে রনেন বারকে তাঁর পদ থেকে বহিষ্কার করা হল। আগামী ১০ এপ্রিল শিন বেটের নতুন প্রধান নিয়োগ করা হবে। ততদিন পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব সামলাবেন।
প্রসঙ্গত, ২ মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হতেই গাজায় পুরোদমে হামলা শুরু করেছে ইজরায়েল। একদিকে, ইজরায়েলি সেনার হামলায় গুঁড়িয়ে যাচ্ছে হামাসের একের পর এক ডেরা, তেমনই প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ মানুষ। এখনও পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০০-র উপর মানুষ। পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তি না দিলে ফল আরও ভয়ংকর হবে বলে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ইতিমধ্যেই ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। মধ্য গাজার নেতজারিম করিডরের অনেকখানি দখল করে ফেলেছে তারা। এই নেতজারিম করিডরের মাধ্যমেই উত্তর এবং দক্ষিণ গাজার মধ্যে যোগাযোগ বজায় থাকে। সেই করিডর ইজরায়েলের হাতে চলে যাওয়ার পর গাজার দুই প্রান্ত কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি এলাকায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইজরায়েলি সেনা।