সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে রক্তাক্ত মায়ানমার। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সেখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। তবে ভোটে লড়ছে না নোবেলজয়ী অং সান সু চির সরকার। শেখ হাসিনার মতো তিনিও ‘নির্বাসিত’।.
মায়ানমারে মোট তিন দফায় নির্বাচন হবে। রবিবার দেশে চলছে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে ১১ জানুয়ারি। শেষ দফার নির্বাচন হবে ২৫ জানুয়ারি। ৩৩০ শহরের মধ্যে ১০২ শহরে নির্বাচন হচ্ছে রবিবার। জানা গিয়েছে, গৃহযুদ্ধের কারণে ৬৫ শহরে ভোট হবে না। ৫৭টি দল এই নির্বাচনে যোগ দিলেও বেশিরভাগ দল নিজেদের প্রদেশের বাইরে প্রার্থী দেয়নি বলেই জানা গিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেনাপন্থী দল ইউএসডিপি দেশের ক্ষমতা দখল করবে। ২০২০ সালের নির্বাচনে সু কি-র ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। কিন্তু সেনা অভিযোগ করে, সেই নির্বাচনে ভোটারদের নাম নথিভুক্ত করার বিষয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এরপরই সেনা অভ্যুত্থানে পতন হয় সু কি-র সরকারের। তারপর সেখানে সরকার গঠন করে জুন্টা। বিশেষজ্ঞদের কথায়, "এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দুই শাসক হাসিনা এবং সু-কি দু'জনেই ক্ষমতাচ্যুত।"
বিশেষজ্ঞদের মতে এই নির্বাচন পাঁচ বছরের সেনা শাসনে প্রায় ভাঙতে বসা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। কঠোর সামরিক শাসনের ফলে তৈরি হওয়া ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেদেশে গণতন্ত্র ফেরানোর কোনও প্রচেষ্টা করছে না সেনা। বদলে একটি পুতুল সরকারের মাধ্যমে ক্ষমতার উপরে তাদের হাত আরও শক্ত হবে।
রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ঘুষ থেকে শুরু করে টেলিকমিউনিকেশন আইন লঙ্ঘন পর্যন্ত নানা অপরাধে নোবেলজয়ী সু কি-কে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন নেত্রী। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর গৃহবন্দি ছিলেন সু কি। তাঁর হাত ধরেই ২০১০ সালে মায়ানমারে গণতন্ত্র ফিরেছিল। কিন্তু দশ বছর যেতে না যেতেই তাঁর পতন হয়। বিশ্বনেতারা এবং মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেতারা বারবারই সু কি-কে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কিন্তু দেখতে দেখতে চার বছর পেরিয়ে গেলেও কারাবন্দিই রয়েছেন সু কি।
এদিকে দিন দশেক আগেই সু কি-র পুত্র কিম অ্যারিস আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আদৌ কি নোবেলজয়ী নেত্রী বেঁচে আছেন? বর্তমানে কিম লন্ডনের বাসিন্দা। সেখান থেকেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকরে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, "দীর্ঘ সময় জনসমক্ষে দেখা যায়নি মা-কে।" কিমের প্রশ্ন, কী করে বুঝব উনি বেঁচে আছেন? এমন মন্তব্যের পরই সু কি-র মৃত্যু ঘিরে গুঞ্জন বাড়ছিল। তবে তা খণ্ডন করে জুন্টা। তারা জানিয়ে দিয়েছে, সু কি-র স্বাস্থ্য ভালোই রয়েছেন।
