সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোগী যত বেশি হবে কাজের চাপ তত বাড়বে। এই ভাবনা থেকেই হাসপাতালে ১০ জন রোগীকে হত্যা করেছিলেন নার্স। শুধু তাই নয়, আরও ২৭ জন রোগীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। ভয়ংকর এই ঘটনায় অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। জানা যাচ্ছে, গত এক বছর ধরে জার্মানির উরসেলেনের এক হাসপাতালে এই হত্যাকাণ্ড চালান ওই নার্স।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে ওই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন অভিযুক্ত নার্স। তাঁর পরিচয় প্রকাশ না করা হলেও পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে হাসপাতালে অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হচ্ছিল একের পর এক রোগীর। তদন্তে জানা যায়, ৪৪ বছর বয়সি ওই নার্স রাতের শিফটে কাজের চাপ কমাতে বয়স্ক ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মরফিন ও মিডাজোলামের মতো ঘুমের ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করতেন। যাতে রাতে ওই রোগীদের বিশেষ যত্ন নিতে না হয়। একের পর এক রোগীর হঠাৎ স্বাস্থ্যের অবনতি ও মৃত্যুতে সন্দেহ হয় চিকিৎসক ও কর্মীদের। তদন্তে নেমে ২০২৪ সালে গ্রেপ্তার করা হয় ওই নার্সকে।
এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার সময় আদালত জানায়, অপরাধী গুরুতর অপরাধমূলক উদ্দেশ্য নিয়েই এই কাজ করেছেন। ফলে কঠোর শাস্তি প্রাপ্য তাঁর। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালে অন্য রোগীদের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইমতো অতীতের ঘটনাও স্খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আপাতত ১০ রোগীকে হত্যার পাশাপাশি আরও ২৭ জন রোগীকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে নার্সের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, জার্মানিতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে হত্যার এমন ভয়াবহ ঘটনা প্রথমবার নয়, এর আগেও এসেছে এমন ভয়ংকর তথ্য। ২০১৯ সালে জার্মানির দুটি হাসপাতালে ৮৫ জন রোগীকে হত্যার অভিযোগে নার্স নীলস হোগেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে জানা যায়, অপরাধী ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে হৃদরোগের ওষুধের অতিরিক্ত ডোজ প্রয়োগ করে রোগীদের হত্যা করেছিলেন।
