সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটককে হত্যার পর যে সাত দফা কূটনৈতিক ‘প্রত্যাঘাত’ করেছিল নয়াদিল্লি, তারই অন্যতম এই পদক্ষেপ। এরপর থেকেই বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে সিন্ধু নদ। যা পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিজমির সেচের জল জোগায় এবং ৯০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদনের জন্য দায়ী। ভারত চুক্তি স্থগিত রাখায় পাকিস্তান যে বড় ধাক্কা খেয়েছে তা নিশ্চিত। কিন্তু আসল সমস্যাটা আরও গভীর। সেনা-সমর্থিত খাল প্রকল্পেই আসল বিপদ প্রতিবেশী দেশের। যার ধাক্কায় পাকিস্তানে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। সোচ্চার হয়েছেন প্রতিবাদে।
কী এই খাল প্রকল্প? এতে বলা হয়েছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ, সিন্ধ, বালোচিস্তানের ৪৮ লক্ষ একর অনুর্বর জমিতে (যা গাজা ভূখণ্ডের আট গুণ) সেচের ব্যবস্থা করা হবে ছ'টি খাল কেটে। আর এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সেনা-নির্ভর বেসরকারি সংস্থা জিপিআই। কিন্তু এই প্রকল্প ঘিরে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ দানা বেঁধেছে। দক্ষিণ পাঞ্জাবের চোলিস্তান অঞ্চলে (যা বৃহত্তর থরের অংশ) জল প্রবাহের ফলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ধু, যা ইতিমধ্যেই তার বরাদ্দকৃত অংশের চেয়ে ২০% কম জল পায়, এই প্রকল্পের ফলে পরিবেশগত ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। মিষ্টি জলের প্রবাহ হ্রাস মাটির লবণাক্ততাতেই বৃদ্ধি ঘটায়। যার প্রভাবে সিন্ধুর কৃষি বিপর্যস্ত হতে পারে। এবং সমুদ্রের জলের অনুপ্রবেশও ত্বরান্বিত হতে পারে এলাকায়।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ এবং জেনারেল মুনির প্রকল্পটি উদ্বোধন করার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। যা এখনও চলছে। এমাসের শুরুতে শরিফ সরকারের অংশ পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি হুঁশিয়ারি দেন সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেবেন তাঁরা। অবশেষে ৩৩০ কোটি ডলারের প্রকল্পে দাঁড়ি টানতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন।
