সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পাকিস্তান যোগের দায় এড়িয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। নিজেদের 'নিরপরাধ' বলে দাবি করলেও বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের কর্মকাণ্ড স্পষ্ট করে দিচ্ছে ২২ এপ্রিলের নরসংহারে সরাসরি যোগ রয়েছে তাদের। পহেলগাঁও কাণ্ডের দায় স্বীকার করা লস্করের ছায়া সংগঠন 'দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট'-এর হয়ে রাষ্ট্রসংঘে ব্যাট ধরল ইসলামাবাদ। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের এই কুকীর্তিতে তাদের দোসর হল চিন।
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সম্প্রতি নিন্দাপ্রস্তাব প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে সেই প্রস্তাবে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিআরএফের নাম উল্লেখ করা হয়নি। জানা গিয়েছে, ওই বিবৃতিতে টিআরএফের নাম উল্লেখ না করার পিছনে রয়েছে পাকিস্তানের হাত। টিআরএফের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রসংঘের নিন্দাপ্রস্তাব প্রকাশ নিয়ে প্রবল আপত্তি জানানো হয় অস্থায়ী সদস্য পাকিস্তানের তরফে। তাদের পক্ষ নেয় চিন। আমেরিকার সঙ্গেও এ নিয়ে ব্যাপক বাদানুবাদ হয়। প্রথমে হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে সে দায় অস্বীকার করেছিল এই জঙ্গি সংগঠন। সেই ঘটনাকেই হাতিয়ার করে পাকিস্তান যুক্তি দেয়, এই হামলায় যে টিআরএফ যুক্ত, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে টিআরএফকে কোনওভাবেই দায়ী করা যায় না। শেষ পর্যন্ত হাফিজ সইদের লস্করের ছায়া টিআরএফকে বাদ দেওয়া হয় ওই নিন্দাপ্রস্তাব থেকে। রাষ্ট্রসংঘে কুখ্যাত এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে বাঁচাতে পাকিস্তানের এই তৎপরতায় স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন তুলছে, কেন টিআরএফকে বাঁচাতে চাইছে ইসলামাবাদ?
কূটনৈতিক মহলের দাবি, এতদিন কাশ্মীরের মাটিতে সন্ত্রাসবাদ চালাতে পাকিস্তানের অস্ত্র ছিল লস্কর ই তইবা। তবে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে লস্করকে দিয়ে সন্ত্রাস চালানো পাকিস্তানের জন্য কঠিন। তাই হাফিজের ছায়া সংগঠনকে হাতিয়ার করেছে তারা। রীতিমতো জল-সার দিয়ে কাশ্মীরের মাটিতে টিআরএফ নামক চারাগাছকে মহীরুহ করে তুলতে উঠেপড়ে লেগেছে আইএসআই ও পাক সেনা। তার যথেষ্ট প্রমাণ ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। এই অবস্থায় পাকিস্তান টিআরএফের ঢাল হয়ে দেখা দেওয়ায় ইসলামাবাদের সন্ত্রাসযোগ নিয়ে সন্দেহের আর কোনও অবকাশই থাকছে না।
সন্ত্রাসবাদী হামলার পর প্রথমে টিআরএফের তরফে দায় স্বীকার করা ও পরে তা অস্বীকার করার নেপথ্যেও পাকিস্তানের হাত দেখছেন তদন্তকারীরা। এবং পুরোটাই হয়েছে পরিকল্পিত ছকে। হামলার দায় স্বীকারের মাধ্যমে প্রথমে গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া হয় এই হামলার 'কৃতিত্ব' টিআরএফের। পরে পাক নির্দেশেই টিআরএফ জানায়, তাদের ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালিয়ে কেউ বা কারা এই বিবৃতি দিয়েছিল। যাতে তাদের বিরুদ্ধে কোনও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ না হয়।
