সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিশোর বয়সেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে নয় নয় করে চার লক্ষ সাবস্ক্রাইবার! কেরিয়ারে এহেন সাফল্য অন্যদের চোখে ঈর্ষার কারণ তো হবে বটেই। সেই ঈর্ষার আগুন থেকে সম্ভবত ঘটে গেল নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বাড়িতে ঢুকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়া হল পাকিস্তানের কিশোরী ইউটিউবারকে। মনে করা হচ্ছে, পারিবারিক সম্মানার্থে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা পাকিস্তানে অহরহই ঘটে থাকে। এই হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশাল মিডিয়ায় 'জাস্টিস' স্লোগান উঠেছে। ঘটনার তদন্ত নেমে অনেক তথ্যই হাতে এসেছে পুলিশের। তবে অভিযুক্ত এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় কিশোরী ইউটিউবার সানা ইউসুফ। ছবি: সোশাল মিডিয়া।
পাকিস্তানের চিত্রালের বাসিন্দা বছর সতেরোর মেয়ে সানা ইউসুফ। নিজের মাটির ঐতিহ্য অর্থাৎ 'চিত্রাল' সংস্কৃতি সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সে। ইউটিউবার হিসেবে দারুণ সাফল্য। কিন্তু তাতে কী? সানার পরিবার মোটেই এসব বিষয়ে ভালো চোখে দেখেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় সানার বাড়িতে কোনও এক আত্মীয় আসে। সানার ঘরের বাইরে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয় ইউটিউবারের। পুলিশ জানাচ্ছে, এরপরই ওই আত্মীয় একেবারে কাছ থেকে সানাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়। গুলির শব্দে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ছুটে এসে দেখে, ১৭ বছরের কিশোরী শরীরে বেশ কয়েকটি গুলির ক্ষত নিয়ে পড়ে রয়েছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।
সানার মতো জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সারের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে সোশাল মিডিয়ায় #JusticeForSanaYousuf বলে ক্যাম্পেন শুরু হয়েছে। অনুগামীরা বলছেন, চিত্রাল শিল্পকলার মাধ্যমে সানা নারীশিক্ষা, স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বার্তা দিতেন। পর্দানসীন পাকিস্তানে সেসব চক্ষুশূল তো বটেই। হয়ত তারই খেসারৎ দিতে হল সানাকে। এই ঘটনায় অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে মেধাবী কিশোরী মালালা ইউসুফজাইয়ের উপর ভয়াবহ হামলার ঘটনা। মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন করা মালালা ছিল জঙ্গিদের প্রধান শত্রু। আর তাই তাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা হয় ১৩ বছর আগে। মালালা মৃত্যুমুখ থেকে ফিরতে পেরেছিল, কিন্তু সানা পারল না।
