সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও সৌদি আরব, কাতার আবার কখনও ইস্তানবুল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নানা জায়গায় 'শান্তি আলোচনা' হয়েছে। দু'দেশকে শান্তির পথে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে আমেরিকাও। কিন্তু সব কিছুরই নিট ফল শূন্য। রফাসূত্র তো দূর এখনও একে অপরকে হামলায় ঝাঁজরা করে দিচ্ছে কিয়েভ-মস্কো। এবার যুযুধান দু'পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে এগিয়ে এসেছে ভ্যাটিকান! যা নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। তাদের দাবি, এগুলো আজগুবি গল্প। দুই গোঁড়া খ্রিস্ট ধর্মালম্বী দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে হলে ভ্যাটিকান নিজেই অস্বস্তিতে পড়বে। আর সেটা চাইবেন না পোপ লিও চতুর্দশ।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন লিও। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ভ্যাটিকান শীঘ্রই বিশ্বব্যাপী সংঘাতের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে চলেছে। তখনই ভ্যাটিকানে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে মধ্যস্থতার বিষয়টি উঠে আসে। কয়েকদিন আগেই পোপের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স এবং বিদেশসচিব মার্কো রুবিও। তারপরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল 'ট্রুথ সোশালে' মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, 'পোপের প্রতিনিধিত্বে ভ্যাটিকান জানিয়েছে যে তারা শান্তি আলোচনা আয়োজনে খুবই আগ্রহী।'
গত মঙ্গলবার, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিও জানান, "আমি পোপের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বৈঠকের আয়োজন করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যদি সত্যিই এমনটা হয় তাহলে আমি সবরকমভাবে ভ্যাটিকানের পাশে থাকব।" কিন্তু এই সব জল্পনা উড়িয়ে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, "অনেকেই নানা কল্পনা করছেন কোথায়, কখন শান্তি আলোচনা হবে। গোঁড়া খ্রিস্ট ধর্মালম্বী দেশেরগুলোর মধ্যে এই ধরনের মধ্যস্থতা অযৌক্তিক। ভ্যাটিকানকে এই ধরনের আলোচনার স্থান হিসেবে কল্পনা করা যায় না। এগুলো আজগুবি কল্পনা। ইউক্রেনে যুদ্ধের মূল কারণ আলোচনা করার জন্য এই ক্যাথলিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা শোভনীয় হবে না। আমি মনে করি এটা ভ্যাটিকান নিজেও চাইবে না। কারণ এমনটা হলে তাদেরই অস্বস্তি বাড়বে।"
চলতি মাসেই তুরস্কের ইস্তানবুলে রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা মুখোমুখি বসেন। তাঁর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছিলেন, তিনি কিয়েভের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি। কিন্তু ইস্তানবুলের বৈঠক তেমন ফলপ্রসু হয়নি। দু’দেশের ১০০০ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয় পুতিন ও জেলেনস্কি প্রশাসন। সেই মতো সেনা ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রায় ৮০০ জন বন্দি বিনিময় হয়েছে।