সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদেশ সফর বা কোনও সম্মেলনে যোগ দিতে গেলেই অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য বিশেষ উপহার নিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেসব উপহারে অবশ্যই থাকে ভারতীয় শিল্প-সংস্কৃতির ছোঁয়া। সেই প্রথার অন্যথা হয়নি সদ্যসমাপ্ত ব্রিকস সামিটেও। রাশিয়ার কাজানে এই সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে প্রত্যেক রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য আলাদা করে উপহার নিয়ে গিয়েছেন মোদি। সামিটের আয়োজক ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে ঝাড়খণ্ডের শোহরাই পেন্টিং তুলে দিয়েছেন তিনি।
ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলার অন্যতম ঐতিহ্য এই শোহরাই চিত্রকলা। 'ওয়ান ডিসট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট' তকমা রয়েছে এই পেন্টিংয়ের। মূলত খড়, গাছের ছোট ডালের মতো প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি ব্রাশ দিয়ে আঁকা হয় শোহরাই পেন্টিংয়ের ছবিগুলো। কখনও স্রেফ আঙুল দিয়েও ছবি আঁকেন শিল্পীরা। পশু-পাখি, প্রকৃতির ছবি ব্যবহার করে সহজভাবে ঝাড়খণ্ডের গ্রাম্যজীবনের কাহিনী তুলে ধরা হয় এই পেন্টিংয়ে। সেই ছবিই 'বন্ধু' পুতিনের হাতে তুলে দিয়েছেন মোদি।
ব্রিকস সামিটে হাজির ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ান এবং উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শওকত মির্জিয়োজেভ। তাঁদেরও বিশেষ উপহার দিয়েছেন মোদি। মাদার অফ পার্ল ধিনুক দিয়ে তৈরি একটি ফুলদানি দিয়েছেন পেজেস্কিয়ানকে। মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে তৈরি হয় এই ধরণের ফুলদানি। উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে একটি ওয়ারলি পেন্টিং দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে জিআই ট্যাগ পাওয়া ওয়ারলি পেন্টিংও মহারাষ্ট্রের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিল্প।
তবে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য সম্ভবত কোনও উপহার নিয়ে যাননি মোদি। উল্লেখ্য, সীমান্ত থেকে সেনা সরানো নিয়ে সহমত হওয়ার পরে ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ আরও গলে ব্রিকস সম্মেলনে। গালওয়ান সংঘর্ষের পরে প্রথমবার বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি এবং শি জিনপিং। ২০১৯ সালের পর এই প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও উপহার বিনিময়ের সৌজন্য দেখা যায়নি মোদি-জিনপিংয়ের মধ্যে।